‘শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে কাজ করছি’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের শিশুরা লেখাপড়া শিখে আগামী দিনে এ দেশের কর্ণধার হবে। তারা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। রবিবার বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা যেন পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে, সেদিকে নজর রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ। এটা সত্যিই যেকোনো শিশুর জন্য খুব কষ্টকর। এ রকম অস্বাভাবিক অবস্থা হয়তো থাকবে না। তবুও আমি তাদের বলব, মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করতে হবে। ঘরে বসে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা করে নিজেদের ব্যস্ত রাখতে হবে। যখন স্কুল খুলবে তখন যেন তারা আবার ভালোভাবে স্কুলে যেতে পারে, পড়াশোনা করতে পারে, সেদিকে বিশেষভাবে সবাইকে নজর রাখতে হবে।
অভিভাবকদের বলব, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ দেয়ার পাশাপাশি তারা যেন শরীরচর্চা করতে পারে, সেই ব্যবস্থাটা আপনারা করবেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ছোট ভাই শেখ রাসেলের প্রতিভা, অসীম সম্ভাবনা এবং তার নির্মম মৃত্যুর কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, শেখ রাসেল, একটি ফুল কুঁড়িতেই শেষ হয়ে গেল, ফুটতেও পারল না। তার জীবনে একটা শখ ছিল। বড় হলে সে সেনাবাহিনীর সদস্য হবে—এ কথাই বলত। যখন আমরা গ্রামে বেড়াতে যেতাম তখন গ্রামের ছোট ছোট শিশুকে একত্র করত সে। তাদের দিয়ে সে প্যারেডও করাত। আজকে রাসেলের জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের এই দিনে রাসেলের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু তার জীবনটা শেষ হয়ে যায় ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে। তাকে নির্মমভাবে চিরবিদায় নিতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্স, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গণ এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত শেখ রাসেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। এ সময় তিনি অ্যানিমেটেড ডকুমেন্টারি ‘বুবুর দেশ’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন; শেখ রাসেলের জীবনীর ওপর প্রকাশিত বই ‘শেখ রাসেল আমাদের আবেগ, আমাদের ভালবাসা’র মোড়ক উন্মোচন ও ছবি প্রদর্শনীর উদ্বোধন; ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে শেখ রাসেলের ‘ম্যুরাল’ উন্মোচন ও ‘শহীদ শেখ রাসেল ভবন’ উদ্বোধন করেন।
এছাড়া তিনি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের কার্যক্রমসংক্রান্ত ভিডিও চিত্র অবলোকন, ‘স্মৃতির পাতায় শেখ রাসেল’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান এবং দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শিক্ষার্থীদের হাতে ল্যাপটপসহ পুরস্কার তুলে দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।