ট্রাম্প দম্পতি করোনায় আক্রান্ত

কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। নিজের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর ট্রাম্প নিজেও এই মহামারীতে আক্রান্ত হলেন। বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেই নিশ্চিত করেছেন। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও সিএনএনের।

শুক্রবার সকালে ট্রাম্প নিজের টুইটারে লিখেছেন, আমি ও ফার্স্টলেডি মেলানিয়া করোনা টেস্ট করিয়েছি। রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। তাতে দেখা গেছে আমরা করোনা পজিটিভ। আমরা কোয়ারেন্টিনে চলে গেছি। সুস্থ হওয়ার প্রচেষ্টা শুরু করে দিয়েছি।

এর আগে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হন মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের একজন হোপ হিকস। এর পরই কোয়ারেন্টিনে চলে যান ট্রাম্প ও মেলানিয়া।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে অপর এক টুইটে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমার সঙ্গে বিরতিহীনভাবে কাজ করা হোপ হিকসের কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে। দুঃখজনক! আমি ও ফার্স্টলেডিও রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। ইতিমধ্যে আমরা কোয়ারেন্টিনে চলে গেছি।’

জানা গেছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার উপদেষ্টা হিকস সম্প্রতি বেশ কয়েকটি স্থানে ভ্রমণ করেছেন। এমনকি মঙ্গলবার ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের প্রথম বিতর্কেও তিনি ট্রাম্পের সঙ্গী হয়েছিলেন।

বিবিসি জানায়, আসন্ন মার্কিন নির্বাচন সামনে রেখে মঙ্গলবার টিভি বিতর্কে অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তার সঙ্গে এয়ারফোর্স ওয়ানে করে ওহিওতে গিয়েছিলেন উপদেষ্টা হিকস।

এমনকি বুধবারে হেলিকপ্টার মেরিন ওয়ানে চড়তেও ট্রাম্পের সঙ্গী ছিলেন ৩১ বছর বয়সী হিকস। এদিন মিনোসোটায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন ট্রাম্প। সেখানে একই বিমানে করে যান ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টা হিকস, কুশনার, ড্যান স্ক্যাভিনো ও নিকোলাস লুনা। তাদের কেউ-ই মাস্ক পরা ছিলেন না।

এ বিষয়ে ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেন, হিকসের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে, আমি এই মাত্র শুনলাম। সে নিঃসন্দেহে একজন পরিশ্রমী। সে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করত। বহু মাস্ক সে পরেছে। তবু তার করোনা ধরা পড়েছে। এর পরই আমি করোনা টেস্ট করাই। এখন রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি। আমরা একসঙ্গে বহু সময় কাটিয়েছি। ফার্স্ট লেডিও পরীক্ষা করিয়েছেন।

হিকসের প্রশংসা করে ট্রাম্প বলেন, সে নি:সন্দেহে অসাধারণ।

ট্রাম্পের সমর্থকরা মনে করছেন হিকসের থেকেই সংক্রমিত হয়েছেন ট্রাম্প। কারণ ট্রাম্পের নির্বাচনী র্যা লিগুলোতে মূল দায়িত্ব পালন করেছেন ৩১ বছর বয়সী এই নারী। তিনি ট্রাম্পের সমর্থকদের সঙ্গে মিশেছেন।

এ বিষয়ে ট্রাম্প ফক্স নিউজকে বলেন, সে উষ্ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সে সব কিছু ভালোভাবেই সামলেছে। সমর্থক-আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যারাই র্যা লির সময় কাছাকাছি ঘেঁষার চেষ্টা করেছে, সবাইকে সে সামলেছে। সে কাউকে দূরে ঠেলে দেয়নি।

এদিকে ট্রাম্প কোয়ারেন্টিনে চলে যাওয়ায় ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট বা প্রার্থীদের মধ্যকার বিতর্ক চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। এমনকি চূড়ান্ত সময়ে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারও বাধাগ্রস্ত হলো। কতদিন আইসোলেশনে থাকবেন সে বিষয়ে কিছু জানাননি ট্রাম্প। তিনি গত কয়েক দিন ধরে নিয়মিতই করোনা পরীক্ষা করাচ্ছিলেন। কিন্তু কোনো রিপোর্টেও তার করোনা ধরা পড়েনি। শেষ পরীক্ষায় তার করোনা ধরা পড়ল।

কোয়ারেন্টিনে চলে যাওয়ায় ট্রাম্পের শুক্রবারের ফ্লোরিডায় নির্বাচনী ক্যাম্পেইন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল। এ বিষয়ে কিছু সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে রিপাবলিকান শিবির থেকে।

এএফপির হিসাব অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে ৭২ লাখের বেশি সংক্রমিত হয়েছেন। মারা গেছে ২ লাখের বেশি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.