নায়করাজ রাজ্জাক। টানা পাঁচ দশক দক্ষ কর্মযজ্ঞ দিয়ে দেশীয় চলচ্চিত্রের ভাণ্ডারকে পূর্ণতা দিয়েছেন তিনি। পেয়েছেন মানুষের অফুরন্ত ভালোবাসা। আজ তার তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটিতে তাকে স্মরণ করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি কোরআন খতম ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করবে বলে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান।
চলচ্চিত্রের এই মহান রাজা পেয়ে গেছেন একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, জাতীয় পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান স্বাধীনতা পদক। ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট কোটি ভক্তকে চোখের জলে ভাসিয়ে পরপারে চলে গেছেন চলচ্চিত্রের এই রাজাধিরাজ। বেদনা নিয়ে আজ তার মহাপ্রয়াণের তিন বছর পূর্ণ হলো।
এক নজরে নায়করাজ রাজ্জাক :
আব্দুর রাজ্জাক।
জন্ম ১৯৪২ সালের ২৩শে জানুয়ারি। মৃত্যু ২০১৭ সালের ২১শে আগস্ট। জনপ্রিয় বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা। যিনি নায়করাজ রাজ্জাক নামে সুপরিচিত। বাংলা চলচ্চিত্র পত্রিকা চিত্রালীর সম্পাদক আহমদ জামান চৌধুরী তাকে নায়করাজ উপাধি দিয়েছিলেন।
নিজের জন্মস্থান কলকাতায় সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন এবং ১৯৬৬ সালে ১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে তার অভিষেক ঘটে।
তিনি জহির রায়হানের বেহুলা চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেন। ষাটের দশকের শেষের দিকে এবং সত্তরের দশকেও তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রধান অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হত।
অভিনয় জীবনে তিনি বেহুলা, আগুন নিয়ে খেলা, এতটুকু আশা, নীল আকাশের নীচে, জীবন থেকে নেয়া, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, ছুটির ঘণ্টা এবং বড় ভালো লোক ছিলসহ মোট ৩০০টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি সব মিলিয়ে ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেন। তার মালিকানার রাজলক্ষী প্রোডাকশন থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। ১৯৭৬, ১৯৭৮, ১৯৮২, ১৯৮৪ ও ১৯৮৮ সালে তিনি মোট পাঁচবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এছাড়াও তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য বাচসাস পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। ২০১৭ সালের ২১শে আগস্ট ৭৫ বছর বয়সে তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।