ইসলামের দৃষ্টিতে নেতৃত্বের মূলনীতি

নেতৃত্ব মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া অমূল্য নিয়ামত। কেউ যদি এর যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারে, মহান আল্লাহর বিধান মোতাবেক নেতৃত্ব দিতে পারে, তা তার পরকালীন মুক্তির মাধ্যম হতে পারে। এর বিপরীতে কেউ নেতৃত্ব লাভ করার পর মহান আল্লাহর বিধান অমান্য করে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাহলে তা তার ইহকাল ও পরকাল ধ্বংস হওয়ার একটি মাধ্যম হবে। তাই মুমিনের উচিত নেতৃত্ব লাভ করলে তার হক আদায়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা।

নেতৃত্বের অন্যতম সৌন্দর্য হলো, অনুসারীদের সঙ্গে নমনীয় আচরণ করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে সব বিশ্বাসী তোমার আনুগত্য করে তাদের জন্য তুমি তোমার অনুকম্পার বাহু প্রসারিত কর।’ (সুরা : আশশুআরা, আয়াত : ২১৫)

নেতা ও অনুসারীদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতি থাকলে তাদের কাজে মহান আল্লাহর রহমত আসে। আল্লাহর সাহায্য আসে।

ফলে নেতৃত্ব আরো দৃঢ় হয়, কল্যাণকর হয়। কিন্তু নিজেদের মধ্যে সহানুভূতি না থাকলে তা থেকে আল্লাহর রহমত উঠে যায়। যার প্রভাব তাদের কাজকর্মেও পড়ে। আল-মিকদাম ইবনে শুরাইহ (রহ.) থেকে তাঁর পিতা সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা (রা.)-কে ইবাদাতের উদ্দেশে নির্জনবাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রাসুল (সা.) নির্জনবাসের জন্য একটি টিলাভূমিতে যেতেন।

তিনি একবার নির্জনবাসে যাওয়ার ইচ্ছা করেন এবং আমার কাছে সদকাহর একটি আনাড়ি উট পাঠিয়ে দেন। তিনি বললেন, হে আয়েশা! সদয় হও। কেননা সহানুভূতি কোনো জিনিসের সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে। আর সহানুভূতি উঠে গেলে তা ত্রুটিযুক্ত হয়।
(আবু দাউদ, হাদিস : ২৪৭৮)

তাই কাউকে মহান আল্লাহ নেতৃত্বের নিয়ামত দান করলে তার উচিত এর মূল্যায়ন করা।

অনুসারীদের সঙ্গে সদয় আচরণ করা। ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ তার নেতৃত্বে কল্যাণ দান করবেন। আবুদ দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তিকে নমনীয়তার অংশ দেওয়া হয়েছে তাকে কল্যাণের অংশ দেওয়া হয়েছে। নমনীয়তার অংশ থেকে যে ব্যক্তিকে বঞ্চিত করা হয়েছে তাকে কল্যাণের অংশ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
(তিরমিজি, হাদিস : ২০১৩)

You might also like

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.