মুসলিম ব্রাদারহুড শাখাগুলোকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় আনছেন ট্রাম্প
মুসলিম ব্রাদারহুডের কিছু শাখাকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন এবং বিশেষভাবে চিহ্নিত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হবে। এই লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। ট্রাম্প মনে করেন, মিসর, লেবানন ও জর্ডানে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে সমর্থন দেয়।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) ডোনাল্ড ট্রাম্প এই আদেশ দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ইসরায়েলের শত্রুদের বিরুদ্ধে চাপ জোরালো করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে একটি আদেশে লেবানন, মিসর এবং জর্দানের মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলোর কথা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেন। এটি আরব বিশ্বের প্রাচীনতম ও সবচেয়ে প্রভাবশালী ইসলামী আন্দোলনগুলোর একটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আদেশ।
হোয়াইট হাউসের একটি তথ্যপত্র অনুযায়ী ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টকে লেবানন, মিসর ও জর্দানের মতো দেশে মুসলিম ব্রাদারহুডের কোনো শাখাকে মনোনীত করা হবে কি না—তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে সচিবদের যেকোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ট্রাম্প প্রশাসন ওই দেশগুলোতে অবস্থিত মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলোর ওপর ইসরায়েল এবং মার্কিন অংশীদারদের বিরুদ্ধে সহিংস হামলাকে সমর্থন বা উৎসাহিত করার এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে সহায়তা প্রদানের অভিযোগ এনেছে।
তথ্যপত্রে বলা হয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
কারণ এই সংগঠনটি মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থ এবং মিত্রদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে।’
রিপাবলিকান ও ডানপন্থী নেতারা অনেক দিন ধরেই মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করার দাবি করে আসছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও তার প্রথম মেয়াদে এমন প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর কয়েক মাস পর সিনেটর রুবিও বলেছিলেন, ট্রাম্প প্রশাসন মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করার জন্য কাজ করছে।
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট, গত সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
ধর্মনিরপেক্ষতা এবং জাতীয়তাবাদী ধারণার বিস্তার ঠেকাতে করার জন্য ১৯২০-এর দশকে মিসরে একটি ইসলামী রাজনৈতিক আন্দোলন হিসেবে ব্রাদারহুড প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি দ্রুত মুসলিম দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং একটি বড় শক্তি হয়ে ওঠে। তবে তারা বেশিরভাগ সময় গোপনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

Comments are closed.