যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কায় বসবাস করেন অ্যালেক্স সিম্পসন। গত ৪ নভেম্বর নিজের ২০তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন তিনি। অথচ জন্মের পরই চিকিৎসকরা তার বাবা-মাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, চার বছরের বেশি বাঁচবেন না অ্যালেক্স। কারণ হাইড্রানেনসেফালি নামক বিরল এক রোগ নিয়ে জন্মেছিলেন তিনি। এই রোগের ফলে তার মস্তিষ্ক নেই বললেই চলে।
হাইড্রানেনসেফালি হলো একটি গুরুতর ও বিরল স্নায়বিক ব্যাধি। এর ফলে মস্তিষ্কের অর্ধগোলক– যার মাধ্যমে মানুষ চিন্তা ও সমন্বয় করে তা আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে অনুপস্থিত থাকে। সে জায়গাটি সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড বা মস্তিষ্ক-মেরুদণ্ডীয় তরল দ্বারা পূর্ণ হয়।
সাধারণত এই রোগের ফলে জন্মের কয়েক বছরের মধ্যে শিশুর মৃত্যু হয়। অ্যালেক্সের ঘটনাটিকে তাই ‘মেডিকেল মিরাকল’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
অ্যালেক্সের বাবা শন সিম্পসন বলেন, ‘এই রোগের অর্থ হচ্ছে, তার মস্তিষ্ক নেই। অর্ধেক নয়, তার পুরো মস্তিষ্কই অনুপস্থিত। তার মস্তিষ্কের পেছনের অংশে থাকা সেরিবেলামের (মস্তিষ্কের একটি অংশ) আকার আমার কনিষ্ঠার অর্ধেকের সমান।
হাইড্রানেনসেফালির ফলে অ্যালেক্স শ্রবণ এবং দৃষ্টিশক্তি নেই। তবে তার পরিবারের বিশ্বাস, এরপরও অ্যালেক্স তাদের উপস্থিতি, এমনকি অনুভূতিও বুঝতে পারে। অ্যালেক্সের ১৪ বছর বয়সি ভাই এসজে বলেন, ‘অ্যালেক্সের পাশে যদি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত কেউ বসে থাকে, কোনো আওয়াজ না করলেও অ্যালেক্স সেটা বুঝতে পারে। যেমন আমাদের দাদির পিঠে যদি ব্যথা হয়, দাদি পাশে বসলে ও সেটাও বুঝতে পারে।
চিকিৎসকদের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছেন অ্যালেক্স। ৪ বছরের বেশি বাঁচবে না বললেও অ্যালেক্স এ বছর কুড়ি বছরে পা রাখলেন। কীভাবে সম্ভব হলো এই ‘মিরাকল’?
বিশ্বাস আর ভালোবাসার জোরেই অ্যালেক্স সব বাধা পেরিয়ে এখনো শ্বাস নিচ্ছেন, বেঁচে আছেন। তার বাবা শনের ভাষায়, ‘২০ বছর আগে আমরা অত্যন্ত ভয়ে ছিলাম। কিন্তু বিশ্বাস রেখেছি বলেই এতদূর আসা সম্ভব হয়েছে।’
সূত্র: এনডিটিভি

Comments are closed.