মাহাথির নিজ দল থেকে বহিষ্কার
নিজের হাতে গড়া রাজনৈতিক দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। গত ১৮ মে দেশটির পার্লামেন্টের অধিবেশন চলাকালীন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের আসনে গিয়ে বসায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে খবর দিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
বৃহস্পতিবার ইউনাইটেড ইনডিজিনাস পার্টি অফ মালয়েশিয়ার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মাহাথিরের সদস্যপদ তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। মালয় ভাষায় বারসাতু নামে পরিচিত এই রাজনৈতিক দলটির সরকার বর্তমানে মালয়েশিয়ার ক্ষমতায় রয়েছে; যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মহিদ্দিন ইয়াসিন। ক্ষমতাসীন সরকারকে সমর্থন না দেয়ার কারণে মাহাথিরকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
৯৫ বছর বয়সী মাহাথির দেশটির এই রাজনৈতিক দলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং দলটির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন এক সময়। গত ফেব্রুয়ারিতে সরকার প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আগে পর্যন্ত তিনিই ছিলেন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘদিনের ক্ষমতা ভাগাভাগির লড়াইয়ের পর জোট ভেঙে গেলে ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়েন মাহাথির।
এই সঙ্কটের অবসান ঘটে মাহাথিরের সঙ্গে বারসাতু গড়ে তোলা মহিদ্দিন ইয়াসিন চার দলীয় একটি জোট গঠন করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর। এক সময় বিরোধীদলে থাকা নাজিব রাজাকের ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের সঙ্গে জোট গঠন করে নতুন সরকার গড়েন মহিদ্দিন। ২০১৮ সালের আগে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালীন নাজিব রাজাক দুর্নীতির দায়ে বর্তমানে বিচারের মুখোমুখি রয়েছেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পর মাহাথির মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। কিছুদিন পর ইস্তফা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিলেও তা নিয়ে সময়ক্ষেপণ শুরু করেন মাহাথির। যা পরবর্তীতে সরকার ভেঙে যাওয়া পর্যন্ত গড়িয়ে ক্ষমতা হারান দেশটির তিনবারের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় নতুন সরকার গঠন এবং সাবেক বিরোধী মিত্রদের বিশ্বাসঘাতক হিসেবে অভিহিত করে নিন্দা জানান।
মহিদ্দিনের প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে গত ১৮ মে দেশটির পার্লামেন্টের আস্থাভোটের ডাক দেন মাহাথির মোহাম্মদ। ক্ষমতায় ফেরার লক্ষ্য নিয়ে এই আস্থা ভোটের ডাক দেয়া মাহাথির হতাশ হন যখন দেশটির রাজা আব্দুল্লাহ করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে পার্লামেন্টের অধিবেশন স্থগিত করায়। পরে মাহাথির বলেন, মালয়েশিয়ায় গণতন্ত্র আর বেঁচে নেই।