আগামী বছর থেকে ফুটবল ক্যালেন্ডারে আসছে বড় পরিবর্তন
ফুটবল বিশ্বে আসছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। ২০২৬ সাল থেকে আর থাকছে না সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের আলাদা আলাদা আন্তর্জাতিক বিরতি। ফিফা নতুন করে সাজিয়েছে পুরুষদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ক্যালেন্ডার, যেখানে এই দুই বিরতি একীভূত হয়ে তৈরি হবে তিন সপ্তাহব্যাপী একটিমাত্র ‘মেগা উইন্ডো’।
এ পরিবর্তনের ফলে ক্লাব ফুটবলে একটানা তিন সপ্তাহ থাকবে বিরতি, সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অক্টোবরের শুরু পর্যন্ত। তবে এতে আন্তর্জাতিক ম্যাচের সংখ্যা বাড়বে না—বরং একই চারটি ম্যাচ খেলতে পারবে প্রতিটি দেশ, কিন্তু একটানা সময়ের মধ্যে।
২০২৩ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত ফিফা কাউন্সিলের বৈঠকে গৃহীত এই সিদ্ধান্ত ২০২৬-৩০ মেয়াদের নতুন ক্যালেন্ডারে কার্যকর হবে।
নতুন নিয়মে কী থাকছে
- বর্তমানে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর—দুটি পৃথক দুই সপ্তাহের উইন্ডোতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
- নতুন নিয়মে দুটি উইন্ডো একত্র হয়ে তৈরি হবে একটি তিন সপ্তাহের আন্তর্জাতিক বিরতি।
- এই সময়ের মধ্যে প্রতিটি দেশ সর্বোচ্চ চারটি ম্যাচ খেলতে পারবে।
এই পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর ওপর। সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে অক্টোবরের শুরু পর্যন্ত টানা তিন সপ্তাহ ক্লাব ফুটবলের কোনো ম্যাচ থাকবে না। প্রিমিয়ার লিগসহ শীর্ষ পাঁচ লিগকেই মানিয়ে নিতে হবে নতুন ছন্দে।
২০২৬–২৭ মৌসুম থেকেই এই সূচি কার্যকর হবে, যা প্রথমবারের মতো প্রভাব ফেলবে ইউরোপিয়ান নেশনস লিগের ম্যাচসূচিতে।
ফিফার ব্যাখ্যা—এই নতুন কাঠামোতে ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি হবে। ঘন ঘন ভ্রমণ কমবে, খেলোয়াড়দের বিশ্রামের সময় বাড়বে এবং ক্লাব সূচিও কিছুটা সহজ হবে।
তবে সমালোচকরাও আছেন। তাদের মতে, একটানা তিন সপ্তাহের আন্তর্জাতিক ব্যস্ততা খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও ক্লাব রিদমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
নতুন সূচিতে খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনা, ভ্রমণ ও পুনরুদ্ধার—সবকিছুর মধ্যেই আসবে পরিবর্তন।
ক্লাবগুলোকে হয়তো নতুনভাবে পরিকল্পনা সাজাতে হবে, কারণ তিন সপ্তাহের বিরতির পর দল আবার মাঠে নামলে ফিটনেস ও রিদম দুটোই হতে পারে বড় চ্যালেঞ্জ।
ফিফার এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক ফুটবলের ক্যালেন্ডারে এক নতুন অধ্যায় খুলে দিচ্ছে। উদ্দেশ্য—ক্লাব ও দেশের দায়বদ্ধতা একসঙ্গে সামঞ্জস্য করা। তবে এর বাস্তব প্রভাব কতটা ইতিবাচক হবে, তা দেখা যাবে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরেই, যখন ফুটবলে শুরু হবে ‘একীভূত আন্তর্জাতিক বিরতি’র নতুন যুগ।

Comments are closed.