গাড়ির যন্ত্রাংশ দিয়ে ভেন্টিলেটর বানাচ্ছে আফগান মেয়েরা
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় গাড়ির যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে কম খরচে ভেন্টিলেটর বানাচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের কিশোরীদের রোবটনির্মাতা একটি দল। চলতি মে মাসের মধ্যেই বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে ভেন্টিলেটর সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে দলটি।
তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিশেষ পুরস্কার জিতেছিল ওই দলটি। আর তখনই তারা পরিচিত হয়ে উঠে সারা দুনিয়ায়।
আফগানিস্তানে ৩ কোটি ৮৯ লাখ মানুষের জন্য গড়ে ৪০০ টিরও কম ভেন্টিলেটর রয়েছে। আর দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আট হাজার এবং মৃতের সংখ্যা প্রায় দুইশো।
ভেন্টিলেটর বানানো নেওয়া কিশোরী দলটির সদস্য ১৭ বছর বয়স্ক নাহিদ রাহিমি বলছিলেন, ‘আমাদের এই উদ্যোগের মাধ্যমে যদি আমরা একটি জীবনও রক্ষা করতে পারি, তবে সেটাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
১৪ থেকে ১৭ বছর বয়সী ‘আফগান ড্রিমার্স’ এর সদস্যরা টয়োটা করোলার মটর এবং হোন্ডা মোটরসাইকেলের চেইন ড্রাইভ ব্যবহার করে ভেন্টিলেটরের প্রোটোটাইপ তৈরি করেছে।
মানসম্পন্ন ভেন্টিলেটর না পাওয়া গেলে জরুরি অবস্থায় গাড়ির যন্ত্রাংশ দিয়ে বানানো এই ভেন্টিলেটর শ্বাসকষ্টের রোগীদের সাময়িক স্বস্তি দেবে বলে মনে করছে আফগান কিশোরীরা।
করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একেকটি ভেন্টিলেটরের বাজারমূল্য ২৫ লক্ষ থেকে ৪৫ লক্ষ টাকা। তাই দরিদ্র দেশগুলোর পক্ষে এগুলো কেনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
কিন্তু আফগান কিশোরীদের দাবি, এটি বানাতে তাদের খরচ পড়ছে মাত্র ৫০ হাজার টাকা!
জানা গেছে, ভেন্টিলেটর বানানোর শতকরা ৭০ ভাগ কাজই প্রায় শেষ। আফগানিস্তানের সরকারও এই প্রকল্পটির খোঁজ রাখছে, এমনকি মেয়েদের সব ধরনের সহায়তা করতে দেশের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য আফগানিস্তানে নারী শিক্ষার হার ৩০ শতাংশেরও কম। এমন একটি দেশে ভেন্টিলেটর বানানোর মাধ্যমে প্রকৌশল খাতে নারীদের অংশগ্রহণ নিয়ে মানুষের সাধারণ ধারণা পাল্টে যাবে বলেই মনে করছেন সচেতন মহল।
বিবিসি অবলম্বনে।।