শিং মাছ খেলে শরীরে সত্যিই রক্ত বাড়ে কিনা জানাচ্ছেন চিকিৎসক
তাই জ্বর, অসুস্থতা বা রক্তস্বল্পতার সময় অনেককেই খাওয়ানো শুরু করেন শিং মাছ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিজ্ঞান কী বলে? শিং মাছ আসলেই রক্ত বাড়ায় কি না?
চিকিৎসক ডা. বিন্তী বলছেন, ‘শিং মাছ খেলে শরীর শক্তি পায়, কারণ এতে প্রোটিন ও মিনারেল আছে। কিন্তু অনেকের ধারণা মতে, এতে রক্ত তৈরির জন্য বিশেষ কোনো উপাদান বেশি থাকে না।’
তার তথ্য মতে, রক্ত তৈরি করতে যে উপাদানগুলো পর্যাপ্ত মাত্রায় দরকার হয় :
– আয়রন
– ফলিক অ্যাসিড
– ভিটামিন বি১২
কিন্তু শিং মাছের মধ্যে সেগুলোর পরিমাণ তুলনামূলক কম।
রক্ত বাড়াতে কী খাওয়া ভালো?
যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন বা হিমোগ্লোবিন কম, তাদের জন্য ভালো উৎস হলো :
– লালশাক
– কচুশাক
– কচুর লতি
– গরু বা খাসির কলিজা
এসব খাবারে আয়রনের পরিমাণ বেশি থাকে, যা রক্ত তৈরিতে সরাসরি ভূমিকা রাখে।
শিং মাছের পুষ্টিগুণ (প্রতি ১০০ গ্রামে)
ক্যালোরি : ১২০ কিলোক্যালোরি
প্রোটিন : ৯১.৫০ কিলোক্যালোরি
ফ্যাট : ২৮ কিলোক্যালোরি
আয়রন : ২.৩ মি.গ্রা.
ভিটামিন এ : ৪৯.৬০ আইইউ
ভিটামিন ডি : ১৯৭ আইইউ
ক্যালশিয়াম : ২২১ মি.গ্রা.
ফসফরাস : ১৮৬ মি.গ্রা.
পটাশিয়াম : ১১৪ মি.গ্রা.
ম্যাঙ্গানিজ : ০.৩০ মি.গ্রা.
কার্বোহাইড্রেট প্রায় নেই বললেই চলে।
উপকারিতা
– প্রোটিন ও মিনারেলস সমৃদ্ধ, তাই শক্তি ও গঠনে সহায়ক
– ভিটামিন এ ও ডি থাকার কারণে চোখ, ত্বক ও হাড়ের জন্য ভালো
– মিনারেল যেমন ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী
কারা খাবেন না?
যদিও শিং মাছ সাধারণত নিরাপদ, তবে কিছু ক্ষেত্রে খাওয়ার আগে ভাবতে হবে। কিডনি রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এতে ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ও পটাশিয়াম বেশি থাকে, যা কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
চাষকৃত শিং মাছ : এতে অনেক সময় ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহার করা হয় দ্রুত বাড়ানোর জন্য। এই উপাদান মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, বিশেষ করে যারা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন।
শিং মাছ শরীরের জন্য পুষ্টিকর, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু শুধু রক্ত বাড়াতে শিং মাছের ওপর নির্ভর করা ঠিক নয়। যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তাদের জন্য আয়রনসমৃদ্ধ খাবার ও সঠিক চিকিৎসা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

Comments are closed.