ভিয়েনায় ট্রাম চালকদের প্রথম বিশ্ব প্রতিযোগিতা

অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত হলো বিশ্বব্যাপী প্রথম ট্রাম চালকদের প্রতিযোগিতা ‘ট্রাম ড্রাইভার ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ’। নানা দেশ থেকে আসা চালকরা শুধু নিজেদের দক্ষতাই দেখাননি, ট্রামভিত্তিক বিভিন্ন মজার চ্যালেঞ্জেও অংশ নেন। ভিয়েনায় ট্রাম চালু হওয়ার ১৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতা দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় করেন।

এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ২৫টি দল। হংকং, রিও ডি জেনেইরো, সান ডিয়েগোসহ নানা শহরের চালকরা আসেন ভিয়েনায়। তাদের জন্য বানানো হয় ২৫০ মিটার দীর্ঘ বিশেষ ট্র্যাক। চালকদের দক্ষতা যাচাই করা হয় আটটি চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে। মসৃণভাবে ব্রেক ধরা, ধীরে গতি বাড়ানো ও যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষা—এগুলোই ছিল মূল লক্ষ্য।

তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল বিশেষ কিছু খেলা। যেমন—‘ট্রাম বোলিং’। বড় আকারের ফোলানো বলে ট্রামের সাহায্যে ধাক্কা দিয়ে ফেলতে হয়েছে ফোলানো স্তম্ভ। খেলাটি বেশ দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আরেকটি খেলা হলো ‘ট্রাম কার্লিং’। এতে ট্রলি ঠেলে নির্দিষ্ট জায়গায় থামাতে হয়েছে চালকদের। আরেক পরীক্ষায় ট্রামের সামনে রাখা পানিভর্তি বাটি নিয়ে এমনভাবে ব্রেক কষতে হয়েছে যেন ছলকে না পড়ে।

এর আগে শুধু ইউরোপীয় পর্যায়ে ট্রাম প্রতিযোগিতা হয়েছে। সেখানে বুদাপেস্টের দল ছিল চ্যাম্পিয়ন। তবে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় তারা চতুর্থ স্থানে নেমে আসে। প্রথম স্থান অর্জন করে স্বাগতিক অস্ট্রিয়া। দ্বিতীয় হয় পোল্যান্ড, তৃতীয় নরওয়ে। আর সর্বশেষ স্থানে জায়গা পায় ক্রোয়েশিয়া।

অস্ট্রিয়ার চালক ফ্লোরিজান ইসাকু নিজ দেশে জয় পেয়ে আবেগাপ্লুত। তিনি বলেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য, সত্যিই বিশেষ এক মুহূর্ত। ভিয়েনার পরিবহন সংস্থা আমার কাছে পরিবারের মতো।’

হাঙ্গেরির ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন ক্রিস্টিনা শনেইডার অবশ্য হতাশ হয়েছেন। তিনি জানান, গতি নয়, বরং নিখুঁত হওয়াটা এখানে বড় বিষয়। কার্লিং খেলায় ব্যর্থ হওয়ায় ভালো ফল করতে পারেননি তিনি।

প্রতিযোগিতাটি শুধু দক্ষতা নয়, গণপরিবহনকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছে। আয়োজকরা আশা করছেন, এতে ট্রাম সংস্কৃতি ও গণপরিবহন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহ আরো বাড়বে। আগামী বছর ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা হবে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে। – বিবিসি অবলম্বনে

You might also like

Comments are closed.