বিচার শুরু ভার্চুয়াল কোর্টে
তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমবারের মত দেশের ভার্চুয়াল আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ওই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আইনজীবীরা জামিনের পাশাপাশি রিট আবেদন দাখিল করেছেন। হাইকোর্টের তিনটি একক বেঞ্চে মামলা দায়ের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য জানা গেছে। হাইকোর্টে দায়েরকৃত এসব আবেদনের উপর মঙ্গলবার শুনানি হতে পারে।
এদিকে হাইকোর্টের পাশাপাশি অধস্তন আদালতে জামিন আবেদন দাখিল করেছেন আইনজীবীরা। বিভিন্ন ধরনের ফৌজদারি মামলায় আসামির জামিন চেয়ে এসব আবেদন দাখিল করেন। দাখিলকৃত আবেদনের মধ্যে সোমবার একটি ফৌজদারি মামলায় কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ আতাবুল্লাহ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানি নিয়ে আসামির জামিন মঞ্জুর করেছেন।
প্রসঙ্গত ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুযায়ী উচ্চ ও অধস্তন আদালতগুলোর বেঞ্চ অফিসারের ই-মেইলে আইনজীবীরা আইনি প্রতিকার চেয়ে জামিনসহ বিভিন্ন আবেদন দাখিল করছেন। এখন এসব আবেদনের একটি কপি ই-মেইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারকের কাছে পাঠানো হচ্ছে। বিচারক আবেদনের গুণাগুণ যাচাই করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য মামলার একটি কার্যতালিকা প্রস্তুত করে দেন। ওই তালিকা অনুযায়ী মামলার বিভিন্ন পক্ষের আইনজীবীরা ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নেন। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থাৎ ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে শুনানিতে অংশ নেয়াকে সশরীরে আদালতের বিচার কাজের অংশ নেয়া হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
ভার্চুয়াল কোর্টে বিচার শুরু
করোনা ভাইরাসজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রায় দুই মাস বন্ধ ছিলো আদালতের কার্যক্রম। পরে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে হাইকোর্টে তিনটি একক বেঞ্চকে রিট, ফৌজদারি মোশন ও অন্যান্য মামলা শুনানির এখতিয়ার দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
রবিবার ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, এদেশে ভার্চুয়াল আদালতের কার্যক্রম প্রথমবারের মত শুরু হল। বিচারিক ইতিহাসে এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই আদালতে প্রথম আবেদনকারী হিসাবে দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদের জামিন চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, হাইকোর্ট সাংবিধানিক আদালত। মূলত সাংবিধানিক আদালত কখনো বন্ধ থাকতে পারেনা। পদ্ধতি যাই হোক অবশ্যই জনগণের জন্য বিচারের দুয়ার খোলা থাকতে হবে।
আইনজীবী দেওয়ান মো. আবু ওবায়েদ হোসেন সেতু জানান, ভার্চুয়াল কোর্টটা সময়ের দাবি ছিল। ইউরোপ আমেরিকায় অনেক আগেই চালু হয়েছে। দেরিতে হলেও একটা বিশেষ পরিস্থিতি আমাদেরও চালু হলো। এটা ভালো উদ্যোগ।
হাইকোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. সাইফুর রহমান ইত্তেফাককে বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। আইনজীবীরা আইনি প্রতিকার চেয়ে আদালতে আবেদন করছেন।