হিরো আনল ৩২৯ কিমি মাইলেজের ইলেকট্রিক বাইক
ভারতের টু-হুইলার জগতে হিরো সবসময়ই অন্যতম বড় নাম। এবার ইলেকট্রিক ভেহিকল (EV) সেগমেন্টে তারা নিয়ে এলো একেবারে নতুন এক চমক—৩২৯ কিলোমিটার মাইলেজ ক্ষমতাসম্পন্ন শক্তিশালী ইলেকট্রিক বাইক। শুধু যাতায়াত নয়, এই বাইক হলো স্টাইল, শক্তি ও দক্ষতার অনন্য মিশেল। চলুন দেখে নেওয়া যাক কী কারণে এটি হয়ে উঠেছে ইভি জগতে সত্যিকারের গেম-চেঞ্জার।
ইঞ্জিন পারফরম্যান্স
এই বাইকের প্রাণ হলো এর শক্তিশালী ইলেকট্রিক মোটর। পারফরম্যান্সের দিক থেকে এটি ১৫০ সিসি পেট্রোল ইঞ্জিনের সমতুল্য শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম। মসৃণ এক্সিলারেশন ও উচ্চ টর্ক থাকায় শহরের ভিড় বা উন্মুক্ত হাইওয়ে—সব জায়গায়ই বাইকটি সমান গতিশীল। সর্বোচ্চ গতি প্রায় ৮৫ কিমি/ঘণ্টা হওয়ায় এটি দৈনন্দিন অফিস যাতায়াতের পাশাপাশি সপ্তাহান্তের লং রাইডের জন্যও উপযুক্ত। মোটরে রয়েছে স্মার্ট কুলিং সিস্টেম, যা দীর্ঘ ভ্রমণেও বাইককে ঠান্ডা রাখে এবং সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে।

মাইলেজ
এই বাইকের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো একবার চার্জে ৩২৯ কিমি পথ অতিক্রম করার ক্ষমতা। ফলে অনেক দূর যাত্রাতেও চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার চিন্তা কমে যায়। দীর্ঘ ভ্রমণ কিংবা শহরের বাইরে ছোট সফরে এই বাইক নির্ভরযোগ্য সঙ্গী। উচ্চ ক্ষমতার লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি শুধু দ্রুত চার্জ হয় না, বরং দীর্ঘদিন ব্যবহারেও এর পারফরম্যান্স অক্ষুণ্ণ থাকে। ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তির মাধ্যমে মাত্র ৪৫ মিনিটে ৮০% চার্জ নেওয়া সম্ভব—ব্যস্ত দিনের মাঝেও এটি বড় সুবিধা।
ফিচার ও ডিজাইন
আধুনিক সব ফিচারে সমৃদ্ধ এই বাইক। ডিজিটাল ড্যাশবোর্ডে স্পিড, ব্যাটারির অবস্থা, রেঞ্জ থেকে শুরু করে নেভিগেশন পর্যন্ত দেখা যাবে। রয়েছে এলইডি লাইটিং, যা শুধু আধুনিক লুকই দেয় না, বরং রাতের বেলায় দৃশ্যমানতাও বাড়ায়। তিনটি রাইডিং মোড—ইকো, স্ট্যান্ডার্ড ও স্পোর্ট—ব্যবহারকারীকে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা দেয়। নিরাপত্তার জন্য সামনে ও পিছনে ডিস্ক ব্রেক এবং রিজেনারেটিভ ব্রেকিং সিস্টেম দেওয়া হয়েছে, যা ব্রেকের সময় শক্তি আবার ব্যাটারিতে ফিরিয়ে দেয়। স্মার্টফোন অ্যাপের মাধ্যমে বাইক ট্র্যাকিং, ব্যাটারি স্ট্যাটাস চেক এমনকি রিমোট লকও করা সম্ভব। আর এর আকর্ষণীয় ডিজাইন—বোল্ড কালার ও শার্প লুক—রাস্তার সবার নজর কাড়বে।

দাম
এই ইলেকট্রিক বাইকের দাম রাখা হয়েছে ভারতে প্রায় ১.৫ লাখ রুপি (এক্স-শোরুম)। পারফরম্যান্স ও ফিচারের তুলনায় এই দাম যথেষ্ট প্রতিযোগিতামূলক। সরকারি ভর্তুকি ও ফাইন্যান্সিং অপশন থাকায় অনেকের জন্য এটি আরও সাশ্রয়ী হবে। ফলে যারা পেট্রোল থেকে ইলেকট্রিক বাইকে শিফট করতে চান, তাদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে দারুণ একটি বিকল্প।
দীর্ঘ রেঞ্জ, শক্তিশালী মোটর, আধুনিক ফিচার ও সাশ্রয়ী দাম—সব মিলিয়ে হিরোর এই নতুন ইলেকট্রিক বাইক হয়ে উঠেছে ইভি দুনিয়ার গেম-চেঞ্জার। যারা স্টাইল ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে ভরসাযোগ্য ইলেকট্রিক বাইক খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি নিখুঁত প্যাকেজ।

Comments are closed.