অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে ইসরায়েল!

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেনেট্ট বলেছেন, দেশের প্রধান জীবাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা নভেল করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরিতে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ সাধন করেছেন। গবেষকরা অ্যান্টিবডি তৈরির প্রথম পর্বের কাজ শেষে করোনার সম্ভাব্য এই চিকিৎসা পদ্ধতির প্যাটেন্ট এবং গণহারে উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্তাবধানে পরিচালিত ইসরায়েলের প্রধান জীবাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইআইবিআর) পরিদর্শনে যান বেনেট্ট। নেস জিওনা এলাকায় অবস্থিত দেশটির এই গবেষণাগারকে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ সময় মন্ত্রীকে করোনার অ্যান্টিবডি দেখানো হয়; যা রোগীর শরীরে একচেটিয়াভাবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং এটিকে নিস্ক্রিয় করে ফেলে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অ্যান্টিবডি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং এই গবেষণা কর্মের প্যাটেন্টের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে ইনস্টিটিউট। পরবর্তী ধাপে গবেষকরা এই অ্যান্টিবডি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে যাবেন।’

নাফতালি বেনেট্ট বলেন, দুর্দান্ত এই সফলতার জন্য আমি ইন্সটিটিউটের স্টাফদের নিয়ে গর্বিত। তাদের সৃজনশীলতা এবং ইহুদি মন চমৎকার এই সফলতা নিয়ে এসেছে।

গত মার্চে ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ দেশটির মেডিক্যাল সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে জানায়, ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ভাইরাসটির জৈবিক প্রক্রিয়া এবং গুণাবলী বোঝার ক্ষেত্রে চিকিৎসার সক্ষমতা, সংক্রমিতদের শরীরে অ্যান্টিবডি উৎপাদন এবং একটি ভ্যাকসিন তৈরির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছেন।

মার্চের সেই অগ্রগতির বিষয়টিই বেনেট্টের কাছে তুলে ধরা হয়েছে নাকি নতুন উদ্যোগে এই অ্যান্টিবডি তৈরির কথা বলা হচ্ছে সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্যও দেয়া হয়নি। তবে করোনার এই অ্যান্টিবডির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে কিনা সেটিও নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি।

ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্স সায়েন্স করপোরেশনের অংশ হিসাবে ১৯৫২ সালে ইসরায়েলি জীবাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইআইবিআর) প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে এটিকে বেসামরিক সংগঠনে পরিণত করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্তাবধানে পরিচালিত হলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে রয়েছে নিবিড় যোগাযোগ।

গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আইআইবিআরকে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির নির্দেশ দেন। মার্চে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় করোনা নিয়ে ইসরায়েলি বিজ্ঞানীদের এই অগ্রগতির বিষয়টি অস্বীকার করে পুরোনো ঢংয়ে জানায়, এ ধরনের কোনো কিছু হলে জানানো হবে।

বিশ্বের অন্যতম গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থা ইসরায়েলি এই জীবাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটির অন্তত ৫০ জন অভিজ্ঞ গবেষক এবং বিজ্ঞানী করোনার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ২৬৮ এবং মারা গেছেন ২৩৭ জন। তবে আত্রান্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০ হাজার ২২৩ জন।

গত বছরের ডিসেম্বরে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস চীন থেকে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বিশ্বের ২২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ২ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭১ জন।

সূত্র: পিটিআই, এনডিটিভি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.