ফেনীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খাত
২০২৪ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার বছর না পেরোতেই ফের পানিতে ডুবেছে ফেনীর বিভিন্ন জনপদ। টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, দাগনভূঞা ও ফেনী সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। প্রবল পানির তোড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক, মৎস্যজীবী ও গবাদিপশু পালনকারীরা।
দপ্তরের প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বন্যাদুর্গত এলাকায় এবারও কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ক্ষতি ছাড়িয়েছে কোটি টাকা। যেখানে শুধুমাত্র মৎস্য খাতেই ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা।
জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত ফেনী জেলায় মৎস্য খাতে ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। জেলার ছয়টি উপজেলায় ২ হাজার ৩৩০টি পুকুর, দিঘি ও খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে ২৭৬ দশমিক ২০ মেট্রিক টন মাছ। যার আর্থিক মূল্য ৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ ছাড়া, বন্যায় ১২৮ মেট্রিক টন পোনা মাছ ভেসে গেছে, যার আর্থিক মূল্য ৩ কোটি ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া খামারগুলোর বিভিন্ন অবকাঠামোতেও বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। এতে ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকার অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
ফুলগাজীর আনন্দপুর ইউনিয়নের মাছচাষি মোঃ আহসান বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মাছের চাষ শুরু করি। ২টি বড় প্রজেক্টে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার মাছ ছিল। বানের পানি আসতে আসতে অর্ধেক মাছ রক্ষা করতে পারি। বাকি মাছ পানিতে ভেসে যায়। এবারের বন্যায় বড় ধরনের ভরাডুবি খেয়েছি। কী করবো কিছু বুঝতেছি না।
এই বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতে কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে তালিকা পাঠানো হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) থেকে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪১টি অংশে ভাঙনে বন্যাকবলিত হয় জেলার পাঁচটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
-ফেনী প্রতিনিধি

Comments are closed.