বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ থেকে ৩ শতাংশ

প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি দুই থেকে তিন শতাংশ অর্জিত হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বৈশ্বিক ঋণদানকারী সংস্থা বিশ্বব্যাংক। ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে চলমান লকডাউন বা অবরুদ্ধ অবস্থা যদি দুই মাস অব্যাহত থাকে, তাহলে প্রবৃদ্ধি হবে তিন শতাংশ। আর অবরুদ্ধ অবস্থা যদি চার মাস থাকে তাহলে প্রবৃদ্ধি হতে দুই শতাংশ। আজ রবিবার বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তর ওয়াশিংটন থেকে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। তাতে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছর শেষে করোনাভাইরাসের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশেরই প্রবৃদ্ধি কমে যাবে। কোনো কোনো দেশে অর্থনৈতিক মন্দাও দেখা দেবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বিদায়ী অর্থবছরে দেশে রেকর্ড ৮.১৫ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার বাজেটে প্রবৃদ্ধি ৮.২ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রেখেছে। যদিও বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সব পরিকল্পনা উলটপালট করে দিয়েছে। করোনাপ্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি এখন টালমাটাল। এমন পরিস্থিতিতে আজ প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোটা দাগে চারটি কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি দ্ইু থেকে তিন শতাংশে নেমে আসবে।

প্রথমত, করোনাপ্রভাবে বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া দ্বিতীয়ত, দেশের অভ্যন্তরে ভোক্তা ব্যয় কমে যাওয়া তৃতীয়ত, উৎপাদন বন্ধ এবং চতুর্থ, প্রবাসী আয় কমে যাওয়া। এসব কারণে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। দারিদ্র্যের হার বাড়বে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়বে খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলো। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রভাব আগামী অর্থবছরেও থাকবে। করোনাপ্রভাব যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়, তাহলে আগামী অর্থবছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি এক শতাংশের ঘরেও নেমে আসতে পারে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশ আফগানিস্তান, মালদ্বীপ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাতে এবছর ঋণাত্বক প্রবৃদ্ধি হবে। যেটিকে অর্থনৈতিক মন্দাও বলা হয়।

বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানে অর্থনৈতিক মন্দার সম্ভাবনা নেই বলে জানায় বিশ্বব্যাংক। পূর্বভাসে বলা হয়েছে, বছর শেষে ভারতে ৪.৮ থেকে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রধান মার্সি টেম্বন বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার খুব দ্রুত স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনা পরীক্ষার আকার বাড়িয়েছে। ব্যবসায়ীদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। একই সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়িয়েছে। এসব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কভিড ১৯ মোবাবিলায় বাংলাদেশের সঙ্গে থাকার ঘোষণা দেন মার্সি টেম্বন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.