ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন মাহির ‘ভাই’

ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী সামিরা খান মাহির কাজিন আবু সাহেদ রাসেল। শনিবার (২৮ জুন) রাতে ফেনী থেকে ঢাকা ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি।

জানা গেছে, সম্পর্কে কাজিন হলেও রাসেল নিজের ছোট ভাইয়ের মতো ছিলেন মাহির কাছে। থাকতেন তাদের বাসাতেই। দুর্ঘটনার দুইদিন আগে বন্ধুর বিয়ে খেতে ফেনী গিয়েছিলেন রাসেল। সেখান থেকে ফেরার সময় দুর্ঘটনায় পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পরও তাকে প্রাণে বাঁচানো যায়নি।

এ ঘটনায় পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন সামিরা খান মাহি। সোমবার দুপুরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘ওরা আমার ভাইকে মেরে ফেলল। আর আমরা কিছুই করতে পারলাম না।’

এরপর আরেকটি স্ট্যাটাসে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি গভীর শোকের সাথে জানাচ্ছি, আমার কাজিন ছোট ভাই (রাসেল) যে আমাদের সঙ্গে আমাদের বাসায় থাকত, একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে।’

মাহি বলেন, ‘একটি নোহা গাড়ি ২-৩ বার ধাক্কা দিয়ে ওকে ফেলে দেয়, গাড়িটি পানিতে পড়ে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট পর দুইজন মানুষ ওকে গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে পানির নীচ থেকে তোলে, কিন্তু এরপর যা ঘটে, সেটা আরও ভয়ংকর।’

পরের ঘটনা তুলে ধরে অভিনেত্রী বলেন, ‘হাসপাতাল ওকে ভর্তি নেয় নাই। কারণ ওরা চিন্তা করছিল, কোথাকার কে এসেছে, বিল দেবে কি না, পরিবার কারা—এসব হিসেব। একজন মানুষের জীবন তাদের কাছে মুল্যবান ছিল না। এরপর ওকে নেওয়া হয় সরকারি হাসপাতালে, কিন্তু সেখানকার ব্যবস্থাপনাও অগোছালো। যথাযথ চিকিৎসা হয়নি।’

প্রশ্ন রেখে মাহি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন, প্রথমে কি আসা উচিত—একজন মানুষের জীবন, নাকি টাকা-পয়সার হিসাব? একটা মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকে, আর একটি গাড়িও দাঁড়ায় না—এ কেমন মানবতা? মানুষ কি সত্যিই এতটা নির্দয় হয়ে গেছে?’

আক্ষেপ প্রকাশ করে এই অভিনেত্রী বলেন, এই সমাজ, এই স্বাস্থ্যব্যবস্থা, এই মনুষ্যত্ব—সবকিছু আজকে প্রশ্নের মুখে। আমার ভাই আর নেই, কিন্তু আমি চাই না অন্য কারো পরিবারের সাথে এমন হোক। আজকে আমার ভাই, কাল আপনার। মানবতা ফিরে আসুক, মানুষের প্রাণই হোক অগ্রাধিকার।

এদিকে এই ঘটনায় কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে চান না মাহি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কোন গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে জানি না। পেছনে থেকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে। কোন গাড়ি, কী গাড়ি কিছুই জানা নেই। তাছাড়া গতকাল রোবরাব রাত সাড়ে নয়টার দিকে দাফন হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ নিতে হলে লাশের পোস্টমর্টেম প্রয়োজন হয়। আমরা চাইনি কোনো কাটাছেড়া করা হোক।’

You might also like

Comments are closed.