আজ বৃটেনে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। আক্রান্তও হয়েছেন কম। বিকেলে এ খবর আসতেই মনটি বেশ চাঙ্গা হয়ে ওঠলো। তাহলে আমরা আলোর পথ দেখছি। আমাদের গৃহবন্দী অবস্থার অবসান ঘটছে। আমরা আবার ঘর থেকে বেরুবো। এই সুন্দর শহরে, সুন্দর পৃথিবীতে তাহলে আরো ক’দিন বাঁচার সুযোগ পাবো।
কাল (মঙ্গলবার) বিকেল পর্যন্ত ভালো থাকবো। নতুন খবর না আসা পর্যন্ত মনটি চাঙ্গা থাকবে। এটুকুই এখন ভালো লাগছে। এই ভালোলাগা নিয়েই আগামী ২৪ ঘণ্টা ভালো কাটাতে পারবো । আপাতত এটি একটি বড় শান্তনা। আগামীকাল মৃত্যু ও আক্রান্তের হার আরো অনেক কমেছে-এমন সংবাদের অপেক্ষায় থাকলাম।
এই শান্তির খবরের মধ্যে বিকলে হঠাৎ করেই একটি দুঃসংবাদ চলে এলো। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ারে আছেন। তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটেছে। এই খবরটি শুনে মনটি খারাপ হয়ে গেলো। দেশের করোনা পরিস্থিতি যখন কিছুটা উন্নত, তখন প্রধানমন্ত্রীর অবস্থার অবনতি।
ব্রেক্সিট নিয়ে যখন বৃটেনে একজনের পর আরো একজন প্রধানমন্ত্রী ব্যার্থতার গ্লানি নিয়ে বিদায় নিচ্ছিলেন, তখন বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে এই কঠিন কাজটির একটি সুরাহা করতে পেরেছিলেন। করোনা পরিস্থিতি জটিল হওয়ার শুরু থেকেই প্রতিদিন সন্ধ্যায় ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতেন তিনি। খুব দৃঢ়তার সথে দেশবাসীকে “স্টে হোম, সেইভ লাইভস” বলে ঘরে থাকতে তাগিদ দিতেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় এনএইচএসকে সবধরনের সহায়তাও দিয়েছিলেন। মিডিয়ায় তাঁর এই সরব উপস্থিতি আমাদের মনে বেশ সাহস ও আশা যুগিয়েছিলো।
কিন্তু হঠাৎ করে তিনি নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়লেন। এ নিয়ে তিনি কোনো লুকোচুরিও করেননি। ভিডিও বার্তা দিয়ে তিনি তাঁর অবস্থা জানিয়েছেন, সেরে ওঠবেন বলে মানুষকে আশ্বস্তও করেছেন। বৃটিশ রাজসিংহাসনে উত্তারাধিকারী প্রিন্স চার্লস করোনা আক্রান্ত হলেও সেরে ওঠেন। বিন্তু বরিস জনসনের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। দেশ জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে প্রধানমন্ত্রী দ্রুত সেরে ওঠবেন। তাঁর জন্য অনেক শুভকামনা।
একটি অনুরোধ জানিয়ে আজকের “করোনার দিনরাত্রি” শেষ করতে চাই। আজ করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগামীকাল উন্নতি-অবনতির যেকোনোটিই ঘটতে পারে। তাই যেন আমরা কাল সকাল থেকে রাস্তাঘাটে, হাঁট-বাজারে ঝাপিয়ে না পড়ি। যে যেভাবে আছি সেভাবেই ঘরে থাকি। নিজে যেন আক্রান্ত না হই। অন্যকে যেন আক্রান্ত না করি। ভালো আছি, ভালো থাকুন। করোনামুক্ত বৃটেন, করোনামুক্ত বিশ্বের জন্য অপেক্ষায় থাকুন।
তাইসির মাহমুদ
ডেগেনহ্যান, লন্ডন,
সোমবার, ৬ এপ্রিল ২০২০