পাকিস্তান-ভারতের আকাশপথ নিষেধাজ্ঞা : বিপাকে উভয় দেশ
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার ফলে আকাশপথে বিমানের চলাচলে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে, যা দুই দেশকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত মাসে হামলার পর পাকিস্তান ভারতের বিমান সংস্থাগুলোর জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় এবং ভারতও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানের বিমান সংস্থাগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়।
এর ফলে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে ফ্লাইট চলতে গিয়ে আকাশপথের উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে তাদের সময় ও খরচ বাড়ছে।
বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যে যেতে ভারতীয় বিমানগুলোকে গড়পড়তা এক ঘণ্টা বেশি উড়তে হচ্ছে, যার কারণে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হচ্ছে, যা যাত্রীদের জন্য আর্থিকভাবে চাপ সৃষ্টি করছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সূত্রে জানা গেছে, আকাশপথে এই পরিবর্তনের ফলে পাকিস্তানও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যদিও নিষেধাজ্ঞা মূলত ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোর জন্য, তবে পশ্চিমা দেশগুলোর বিমান সংস্থাগুলোও পাকিস্তানের আকাশপথ এড়িয়ে চলছে। লুফথানসা, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, এয়ার ফ্রান্স, আইটিএ (ইতালি), এলওটি (পোল্যান্ড) ইত্যাদি বড় ইউরোপীয় বিমান সংস্থাগুলো পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে।
পাকিস্তানের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, যা প্রতি মাসে আকাশপথ ব্যবহার থেকে লাখ লাখ ডলার আয় করত, এখন আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলো পাকিস্তানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলায় তাদের আয় কমেছে এবং এই অবস্থায় পাকিস্তানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এই ক্ষতির সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে পাকিস্তান বছরে ৬০ কোটি ডলার পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এদিকে, ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোও পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করতে না পেরে মাসে ৭ থেকে ৮ কোটি ডলার অতিরিক্ত খরচ করছে, যা তাদের আর্থিক চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। আকাশপথের এই পরিবর্তন, বিশেষত আকাশপথের মাধ্যমে চলাচলের সময় বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ, যাত্রীদের উপরও চাপ সৃষ্টি করছে।

Comments are closed.