নিরাপদ ড্রাইভিংয়ে ১২ নিয়ম : দুর্ঘটনা এড়াতে আপনার করণীয়

নিরাপদ ড্রাইভিং কেবল একটি দক্ষতার বিষয় নয়। এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে, যা আমাদের প্রতিদিনের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ২০১৮ সালে “সড়ক পরিবহন আইন” প্রণয়ন করেছে, যা চালকদের জন্য সিটবেল্ট ব্যবহার, গতি নিয়ন্ত্রণ, এবং লাইসেন্স নবায়নের মতো বিষয়গুলো বাধ্যতামূলক করেছে

তবে আইন প্রণয়নের পাশাপাশি আমাদের প্রত্যেকের সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণই পারে সড়ককে নিরাপদ করে তুলতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিরাপদ ড্রাইভিংয়ে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম রয়েছে, যা অনুসরণ করলে আপনি নিজে যেমন নিরাপদ থাকবেন, তেমনি অন্যদের জীবনও রক্ষা করতে পারবেন।

দুর্ঘটনা এড়াতে নিরাপদ ড্রাইভিংয়ে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম

সিটবেল্ট ব্যবহার করুন। সামনে ও পেছনের যাত্রীদের জন্য সিটবেল্ট বাধ্যতামূলক। এটি দুর্ঘটনার সময় গুরুতর আঘাতের ঝুঁকি কমায়।

গতি নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নির্ধারিত গতি সীমা মেনে চলুন এবং রাস্তার অবস্থা অনুযায়ী গতি সামঞ্জস্য করুন।
মোবাইল ফোন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন- ড্রাইভিংয়ের সময় ফোন ব্যবহার মনোযোগ বিভ্রান্ত করে, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলুন। সিগন্যাল, জেব্রা ক্রসিং, ওভারটেকিং ইত্যাদি নিয়ম যথাযথভাবে অনুসরণ করুন।

অন্য যানবাহন থেকে সঠিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সামনের গাড়ির সাথে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখলে হঠাৎ ব্রেক করার সময় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

মিরর ব্যবহার করুন। লেন পরিবর্তনের আগে ওভারভিউ মিরর ও সাইড মিরর ব্যবহার করে আশেপাশের যানবাহনের অবস্থান নিশ্চিত করুন।

ধীরে ধীরে ব্রেক করুন। হঠাৎ ব্রেক না করে ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে ব্রেক করুন, বিশেষত ভেজা বা পিচ্ছিল রাস্তায়।

রাতের ড্রাইভিংয়ে লাইট সঠিকভাবে ব্যবহার করুন। হেডলাইট ও ইমারজেন্সি লাইট সঠিকভাবে ব্যবহার করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন এবং অন্যদের বিভ্রান্তি এড়ান।

অ্যালকোহল পান করে ড্রাইভিং করবেন না। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো আইনত দণ্ডনীয় এবং এটি দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ায়।

রাস্তার অবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকুন। গর্ত, কুয়াশা, বৃষ্টি ইত্যাদি রাস্তার অবস্থা বিবেচনা করে গাড়ি চালান।
নিয়মিত গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ করুন। টায়ার, ব্রেক, লাইট, ইঞ্জিন ইত্যাদি নিয়মিত পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ করুন।

মানসিক শান্তি বজায় রাখুন। ড্রাইভিংয়ের সময় ধৈর্য ধরুন, রাগ বা হতাশা থেকে বিরত থাকুন। ট্রাফিক জ্যামে ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করুন।

এই নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি নিজে যেমন নিরাপদ থাকবেন, তেমনি অন্যদের জীবনও রক্ষা করতে পারবেন। সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। নিরাপদ ড্রাইভিংয়ের মাধ্যমে আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।

You might also like

Comments are closed.