উত্তেজনার ঝড় তুলেছে মার্সিডিজের এই ইভি!

একবারের চার্জেই চলবে ৭৯২ কিলোমিটার

জার্মান বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা মার্সিডিজ-বেঞ্জ তাদের জনপ্রিয় সিএলএ মডেলের নতুন সংস্করণ উন্মোচন করেছে; যা শুধু নতুন ডিজাইনের প্রতিশ্রুতি নিয়েই আসেনি, বরং প্রযুক্তিগত দিক থেকেও বড় লাফ দিয়েছে। মার্সিডিজ-বেঞ্জ সিএলএ-এর সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক (ইভি) এই গাড়ি ভক্তদের মনে উত্তেজনার ঝড় তুলেছে। এটি একবারের চার্জেই চলবে ৭৯২ কিলোমিটার পথ।

তবে যারা বৈদ্যুতিক গাড়ির পথে পুরোপুরি যেতে প্রস্তুত নন, তাদের জন্যও রয়েছে মাইল্ড-হাইব্রিড সিস্টেমের সাশ্রয়ী বিকল্প।

২০২৬ সালের মার্সিডিজ-বেঞ্জ সিএলএ-এর ডিজাইনে পুরনো মডেলের পরিচিত ঢালু ছাদের স্টাইল বজায় রাখা হয়েছে, গাড়িটির আকার বড় করা হয়েছে।

নতুন ব্যাটারি প্যাকের জন্য জায়গা করে দিতে এর হুইলবেস এখন ২,৭৯০ মিমি, দৈর্ঘ্য ৪,৭২৩ মিমি, প্রস্থ ১,৮৫৫ মিমি এবং উচ্চতা ১,৪৬৮ মিমি। এই বড় আকারের ফলে গাড়িটিতে পিছনের দিকে কোয়ার্টার উইন্ডো যুক্ত হয়েছে, যা এর চেহারায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

গাড়ির সামনের অংশটি মার্সিডিজের পূর্বে প্রকাশিত কনসেপ্ট মডেলের সঙ্গে মিল রেখে ডিজাইন করা হয়েছে। গ্রিল এলাকায় একাধিক আলোর সমন্বয়ে একটি আকর্ষণীয় চেহারা তৈরি করা হয়েছে। এতে মাল্টি-বিম এলইডি হেডলাইট রয়েছে, যার মধ্যে তিন-পয়েন্টেড তারার আকৃতির ডিআরএল (ডে-টাইম রানিং লাইট) ব্যবহার করা হয়েছে। এই আলোগুলো গাড়ির পুরো প্রস্থ জুড়ে একটি লাইট বারের মাধ্যমে সংযুক্ত, যা এটিকে একটি আধুনিক ও প্রিমিয়াম লুক দিয়েছে। পিছনের টেললাইটেও একই ডিজাইনের ধারা অনুসরণ করা হয়েছে, যেখানে ৪০টি আলোকিত লাউভার একটি লাইট বারের মাধ্যমে সংযুক্ত। এই ডিজাইন গাড়িটির চার-দরজার কুপে চরিত্রকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে।

ইন্টেরিয়র, প্রযুক্তির নতুন উচ্চতা: গাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে ড্যাশবোর্ড জুড়ে থাকা তিনটি স্ক্রিন। এর মধ্যে রয়েছে ১০.৩ ইঞ্চির ইনস্ট্রুমেন্ট ক্লাস্টার, ১৪.০ ইঞ্চির সেন্টার টাচস্ক্রিন এবং যাত্রীর জন্য আরেকটি স্ক্রিন। ভলিউম নিয়ন্ত্রণের জন্য টাচ-স্লাইডার এবং স্টিয়ারিং হুইলে টাচ-সোয়াইপ বোতামের মতো আধুনিক ফিচারও রাখা হয়েছে। এছাড়া, নতুন এমবিইউএক্স সিস্টেমের সঙ্গে গুগল ম্যাপস নেভিগেশন এবং জেমিনি এআই-এর মাধ্যমে সার্চের সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে।

একটি বিশেষ আকর্ষণ হল ‘মুড রিং’, যা ড্রাইভারের মানসিক অবস্থা চিনতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তি গাড়ির অভিজ্ঞতাকে আরও ব্যক্তিগত এবং স্মার্ট করে তুলেছে। ভিতরের ডিজাইনে বিলাসিতা এবং প্রযুক্তির এক অসাধারণ মিশ্রণ দেখা যায়, যা এই গাড়িকে প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা করে।

রেঞ্জ ও পাওয়ারট্রেন: শক্তি ও দক্ষতার সমন্বয়: ২০২৬ মার্সিডিজ-বেঞ্জ সিএলএ-এর বৈদ্যুতিক সংস্করণে প্রথম ৮০০-ভোল্ট আর্কিটেকচার ব্যবহার করা হয়েছে। এটি ৮৫ কিলোওয়াট-আওয়ারের নিকেল-ম্যাঙ্গানিজ-কোবাল্ট ব্যাটারি প্যাকের সঙ্গে ৩২০ কিলোওয়াট পর্যন্ত দ্রুত চার্জিংয়ের সুবিধা দেয়। সিএলএ২৫০ প্লাস ভ্যারিয়েন্টে রয়েছে ২৬৮ হর্সপাওয়ারের রিয়ার মোটর, যা একবার চার্জে ৭৯২ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জ দেয়।

অন্যদিকে, সিএলএ ৩৫০ ৪ ম্যাটিক ভ্যারিয়েন্টে অল-হুইল-ড্রাইভ সিস্টেমের সঙ্গে ৩৪৯ হর্সপাওয়ার শক্তি এবং ৭৭১ কিলোমিটার রেঞ্জ পাওয়া যায়।

এছাড়া, এই বছরের শেষের দিকে একটি পেট্রোল-হাইব্রিড সংস্করণও আসবে। এতে ১.৫ লিটারের (এম ২৫২) পেট্রোল ইঞ্জিনের সঙ্গে ৪৮-ভোল্টের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি থাকবে, যার ক্ষমতা ১.৩ কিলোওয়াট-আওয়ার। বৈদ্যুতিক মোটর এবং ইনভার্টার একটি নতুন আট-স্পিড ডুয়াল-ক্লাচ ট্রান্সমিশনে একত্রিত করা হয়েছে। এই মোটরটি আটটি গিয়ারেই শক্তি পুনরুদ্ধার (রিজেনারেশন) করতে সক্ষম, যা এর দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.