কুমিল্লায় সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়িতে এক তরুণীকে (১৯) দল বেধে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার (১৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের কুমিল্লা জেলা আদালতে হাজির করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলো লাকসাম উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৫), পৌরসভার শ্রীপুর মধ্যপাড়ার মো. মমিনের ছেলে মো. মাসুদ (২৩), বাতাখালী এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মনির হোসেন হৃদয় (২৩), উত্তর বিনই এলাকার মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আল আমিন (২৩) ও মধ্য লাকসাম এলাকার মৃত মোস্তাফিজ মজুমদারের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার কল্পনা (৪০)।
এ ঘটনায় জড়িত সবাইকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা। তিনি বলেছেন, গ্রেপ্তাররা প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে একজন নারী আছেন, যার বাড়িতে ওই গৃহবধূকে দ্বিতীয় দফায় ধর্ষণ করা হয়। আমরা এ ঘটনায় কঠোর অবস্থানে রয়েছি।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় লাকসামে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং ভিকটিমের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা হবে।
সাবেক মন্ত্রী তাজুলের পরিত্যক্ত বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
এদিকে লাকসামে আবারও আলোচনায় সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের বাড়িটি। যা ওই এলাকায় মন্ত্রী বাড়ি নামেই পরিচিত। গত বছরের ৫ আগষ্ট সরকার পতনের দিন লাকসাম পৌর এলাকার ওই বাড়িটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ লোকজন। পরিত্যাক্ত ওই বাড়িতেই প্রথম দফায় দলবব্ধ ধর্ষণের শিকার হন গৃহবধূ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী জেলার সোনাপুর এলাকার এক তরুণী ও তার স্বামী গত ১৩ মার্চ লাকসামে তার নানা শ্বশুরের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। ১৪ মার্চ ভোরে তারা লাকসাম বাইপাস মোড় থেকে বাড়ি ফেরার জন্য অটোরিকশায় ওঠেন। চালক মো. মাসুদ তাদের স্বামী-স্ত্রী কিনা জানতে চেয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে। একপর্যায়ে কৌশলে লাকসামের গন্ডামারা এলাকায় নিয়ে যায়। অভিযুক্তরা তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে এবং পরিকল্পিতভাবে লালমাই উপজেলার মগবাড়ি এলাকায় নিয়ে স্বামীকে ফেলে রেখে তরুণীকে অপহরণ করে।
পুলিশ জানায়, পরে তরুণীকে লাকসামের বড়তুফা এলাকায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামের পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে অভিযুক্ত মো. মাসুদ ও মোহাম্মদ আলী তাকে ধর্ষণ করে। এরপর ভুক্তভোগীকে লাকসাম পৌর শহরের ৮নং ওয়ার্ডের তালুকদার ভিলায় অভিযুক্ত বিলকিছ আক্তার কল্পনার ভাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে পুনরায় ধর্ষণ করা হয়।
পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় ভুক্তভোগীর স্বামী তাকে উদ্ধার করে। পরে তার মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে লাকসাম থানায় মামলা দায়ের করেন।