ফলের দাম বেশি, ক্রেতা কম

রমজান মাসে ইফাতারিতে সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে সবার পছন্দ রসালো ফল। তাই এই মাসে অন্য সব কিছুর সঙ্গে ইফতার আয়োজনে ফলের চাহিদাও বেশি থাকে। তবে এবার অন্য বছরের তুলনায় ফলের চাহিদা কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটের ফল বাজারের দোকানিরা। বিশেষ করে আমদানি করা ফলের ক্রেতা কমেছে আগের চেয়ে।

ফল ব্যবসায়ীরা জানান, ডলার সংকট ও অতিরিক্ত শুল্কারোপের কারণে এমনিতেই ফলের দাম বেড়েছে। এরপর রোজার মাসে আড়ৎ থেকেও আরওে বেশি দাম ফল কিনতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে খুচরা বাজারে এটির প্রভাব পড়েছে। আর দাম বৃদ্ধি ও নানা সংকটের কারণে ফল বাজারে ক্রেতা কমেছে বলে জানান তারা।

ক্রেতারা জানান, নানা কারণে ব্যক্তিগত পর্যায়ে অর্থনৈতিক সংকটে প্রায় সবাই। এই পরিস্থিতিতে ইচ্ছে থাকলেও অনেক ফলের দাম সাধ্যের বাইরে। তাই আগের তুলনায় পারিবারিক খাদ্য তালিকার চার্ট থেকে তুলনামূলক দামি ফলের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটের পুরো ফল বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল এখন তরমুজ। তবে এটির দাম এই এলাকার সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। কারণ প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। পেয়ারা কেজি ১৫০, প্রতি পিস আনারস পাওয়া যাচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে।

দেশীয় সহজলভ্য ফল পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগেও যেটা ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল। কলা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে।

অন্যদিকে প্রতি কেজি আপেল বিক্রি হয় ৩৫০ টাকা কেজি দরে, গ্রিন আপেল ৪৫০ টাকা, মাল্টা ৩০০ টাকা, কমলা ২৮০ টাকা, চায়না (মোটা) কমলা ৩২০ টাকা, আঙুর (কালো) ৪২০ টাকা, আঙুর (সবুজ) ৩৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রমজানের আগে এসব ফলের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।

এক সপ্তাহ আগেও একদম নিম্নমানের খেজুর বিক্রি হতো ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়। খুচরা দোকানে দাম হাঁকা হচ্ছে ২৫০ টাকা পর্যন্ত। আজোয়া, মরিয়ম, মেডজুল, মাব্রুম খেজুরের জন্য গুনতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা।

সেগুনবাগিচা থেকে ফল কিনতে এসেছেন জিল্লুর রহমান নামের এক ক্রেতা। তিনি বলেন, বছরের শুরু থেকে ফলের দাম এমনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগের মতো নিয়মিত ফল কেনা সম্ভব হচ্ছে না। একরকম বাধ্য হয়ে বাজার তালিকা থেকে ফল কেনার পরিমাণ কমাতে হচ্ছে।

পল্টন মোড়ের গৃহিণী লীজা সুলতানা। তিনি ফল কিনতে এসে বলেন, আমাদের সংসারের যে পরিমাণ ইনকাম তাতে আমরা সপ্তাহে দুবার ফল কিনতাম। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি ফল বাজারের, তাতে ফল কেনার পরিমাণ কমাতে হয়েছে।

ফল দোকানি জামাল ভূঁইয়া বলেন, এবার রোজায় আগের সব বছরের তুলনায় ফলের চাহিদা কম। প্রথম রোজার দিন শুধু একটু বেশি ক্রেতা ছিল। তারপর প্রতিদিনই অল্প অল্প করে চাহিদা কমেছে।

আরেক ফল ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, এবার বছরের শুরু থেকে ফলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপর রমজান মাসে আরও একটু বাড়ছে। সব মিলিয়ে অনেক ফলের দাম এমন ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যা ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। অনেকের নিয়মিত বাজারের তালিকা ফল থাকলেও এখন সেটি আর নেই।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.