পদ্মা সেতুর ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি: ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
পদ্মা সেতুর ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি খুঁজে পেয়েছে দুদক। এ ঘটনায় ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সংস্থাটি। একইদিন সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এবং তার স্ত্রী হাসিনা গাজীর বিরুদ্ধে ২৮৮ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ পৃথক দুই মামলা হয়েছে।
৩২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা বহুমুখী সেতু ছিল পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের অগ্রধিকারভিত্তিক প্রকল্প। প্রকল্পে একটা বড় অংশ ভূমি অধিগ্রহণ এবং পরামর্শক নিয়োগে ব্যয় হয়।
অভিযোগ রয়েছে, জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পদে পদে ঘটেছে অনিয়ম-দুর্নীতি। ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর অনুসন্ধানে নেমে দুদক খুঁজে পেয়েছে নানা অসঙ্গতি। দুদক জানায়, ভুয়া রেকর্ড ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ লুটপাট করায় মাদারীপুরের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা প্রমথ রঞ্জন ঘটকসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ অন্যন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে সরকারি খাস জমি অর্পিত সম্পত্তি এবং অন্যের মালিকানাধীন সম্পত্তির ভূয়া রেকর্ড সিজন করে জাল-জালিয়াতি প্রতারণা ও অপরধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে মোট ২৩ জনের নামে আরও একটি মামলা রুজু হয়েছে।’
এদিন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও ২৮৮ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে দুটি মামলা করে সংস্থাটি।
মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘নিজ ও প্রতিষ্ঠানের নামে ছয়টি ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে ২৫৭ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আয়ের উৎস আড়াল করেছেন বলে অনুসন্ধানকালে প্রমাণিত হয়েছে।’
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের ২৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের নথি গায়েব ও দুর্নীতির খোঁজে অভিযান চালিয়েছে দুদক। বেশ কিছু নথি নিয়েছে সংস্থাটি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা বলে জানান দুদক কর্মকর্তা।
দুদকের সহকারী পরিচালক কামিয়াব নবী বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে সবই আসবে হয়তো। মাত্র তো অভিযোগটা শুরু হয়েছে। আরও অভিযোগ যখন আসবে, সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ আসবে ইনফ্যাক্ট আমরা যে কাগজগুলো সংগ্রহ করলাম এগুলো থেকেও আমরা হয়তো কিছু পাবো।’
এর আগে সকালে ২৩ কোটি টাকার ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পে’ দুর্নীতি হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুদক।
এ নিয়ে গত সাত মাসে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রায় শতাধিক অভিযান চালিয়েছে সংস্থাটি।