মধ্যরাতে ব্রিফিংয়ে আসিফ : ছোট অপরাধ বাড়ছে, বড় অপরাধ কমে এসেছে

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গত কয়েক মাসে উল্লেখযোগ্যভাবে বড় ধরনের অপরাধ কমে এসেছে। তিনি বলেন, বড় অপরাধ কমে এলেও ছোটখাটো অপরাধ বেড়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে রাজধানীর বিজয় সরণির নভোথিয়েটারের সামনে ঢাকা মহানগর এলাকায় জননিরাপত্তা জোরদারে চলমান বিশেষ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে আসিফ মাহমুদ এ কথা বলেন।

স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে জনগণের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন পর্যন্ত আগের অবস্থানে পৌঁছায়নি। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ঠিক করার জন্য নতুন নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করি এর ফলাফল পাওয়া যাবে।

আসিফ মাহমুদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে গত পরশু আমাদের কোর কমিটির মিটিং ছিল। সেখানে ঢাকার সব দায়িত্বশীলদের নিয়ে পুলিশ-সেনাবাহিনীসহ আরো যারা আছে তাদেরকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গলিতে টহল বৃদ্ধি করাসহ বেশকিছু বিশেষ সিদ্ধান্ত এসেছে। সেগুলোর বাস্তবায়ন পরিদর্শন করার জন্য গত এক ঘণ্টায় আমি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখলাম। প্রত্যেকটা মোড়ে-মোড়ে পুলিশের উপস্থিতি আছে এবং টহল গাড়ি আছে। এ ছাড়া অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিতি রয়েছেন।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, আশা করি দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। বড় ধরনের অপরাধগুলো যেমন- হত্যা এবং ডাকাতির মতো ঘটনাগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। ছোট ধরনের অপরাধ যেমন ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ইদানিং একটু বাড়ছে। এটা নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নজর দিয়েছে। আশা করি দ্রুত সুফল পাওয়া যাবে এবং এই ধরনের ঘটনা কমে আসবে। আপনি কোনো সোসাইটি বা এমন কোনো দেশ পাবেন না যেখানে অপরাধ হয় না। অপরাধ থাকবে তবে সেটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। জনগণের মনে কোনো ধরনের আতঙ্ক বা প্যানিক সৃষ্টি যেন না হয় সেটা সরকারের দায়িত্ব।

আজকের এই পরিদর্শনটা কি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা করতে পারতেন না, তার জায়গায় অন্যরা কেন আসছেন— এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমার জানামতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাও পরিদর্শন করছেন। তিনি গণমাধ্যমের সামনে একটু কম আসেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে আসিফ বলেন, একটা ঘটনা ভাইরাল হলে অনেক প্যানিক সৃষ্টি হয়ে যায়। প্যানিক সৃষ্টি হলে মনে হয় যে এ ধরনের ঘটনা হয়তো অনেক বেশি হচ্ছে। তবে আমাদের সবসময় পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করা উচিত। বিগত ছয় মাসে পরিস্থিতি যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে।

গত দুদিন আগে একটি সংস্থার মহাপরিচালক বলেছিলেন, বাংলাদেশের চাঁদাবাজি কমে এসেছে তাই চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে, তাহলে চাঁদাবাজি থাকলে কি এই জিনিসগুলো হতো না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা তার ব্যক্তিগত বক্তব্য হতে পারে। জুলাইয়ের পরও আমরা তো দেখেছি প্রতিটি ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি হচ্ছিল। দেখা গেছে আগে যারা কালেকশন করত তাদের জায়গায় এখন নতুন মানুষ চলে এসেছে এবং তাদের পেছনে রাজনৈতিক ইন্ধনও আছে। আমাদের আহ্বান থাকবে রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ যারা আছেন চাঁদাবাজিকে যেন প্রশ্রয় না দেওয়া হয়।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে যারা অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল তাদের তো নিজস্ব লোকজন আছে তারা জামিনে বের হয়ে আবার সংঘটিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তাদেরকে নজরদারি করে প্রয়োজনে আবারো গ্রেপ্তার করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতি খারাপ করার জন্য এক ধরনের রাজনৈতিক প্রচেষ্টাও আছে। মাঝেমধ্যে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন টেলিগ্রাম গ্রুপের মিটিংয়ের স্ক্রিনশট আপনারা দেখবেন। সেখানে নির্দেশনাগুলো এ রকম যে সরকারকে উৎখাত করতে হবে। দেশের পরিস্থিতি খারাপ করতে হবে। মানুষকে বুঝাতে হবে শেখ হাসিনাই ভালো ছিল।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী ও ডিএমপি কমিশনার শেখ মো.সাজ্জাত আলী।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.