নোয়াখালীর কবিরহাটে গভীর রাতে এক ব্যক্তির গরুর খামারে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় খামারি ও তার দুই ভাইয়ের ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেওয়া হয়। আগুনে খামারে থাকা আটটি গরু দগ্ধ হয়েছে। এর মধ্যে একটি মারা গেছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ২টার দিকে উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের কালা মিয়া মেম্বারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারির নাম মো. শাহজাহান। তার অভিযোগ, আগুনে খামারটির প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। খামারটি তার উপার্জনের একমাত্র সম্বল ছিল।
শাহজাহান বলেন, ২০ বছর ধরে গরুর খামারে সঙ্গে জড়িত। পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম এই খামার। খামারে ছয়টি বড় গরু ও দুটি বাছুর ছিল। গত রাত ১টার দিকে গরুর দুধ নেওয়ার পর খামার বন্ধ করে ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত ২টার দিকে খামার থেকে গরুর চিৎকারের শব্দ পেয়ে জানালা দিয়ে খামারে আগুন জ্বলতে দেখি।
খামারি আরও বলেন, খামারে থাকা গরুগুলোর গায়ে আগুন জ্বলতে দেখে ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তখন দেখি ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া। তাই বের হতে পারিনি। পাশে থাকা দুই ভাইয়ের ঘরের বাইরের দরজা একইভাবে আটকে দেওয়া হয়। পরে আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে বাইরে থেকে আটকানো দরজা খুলে দেন এবং আগুন নেভাতে সহযোগিতা করেন। ততক্ষণে খামারে থাকা আটটি গরু ও গোখাদ্য পুড়ে যায়।
শাহজাহান বলেন, বাড়ির একপক্ষের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এরই জের ধরে কয়েক দিন ধরে তারা হুমকি দিয়ে আসছিল। ধারণা করছি, তারাই খামারে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়েছে। এ ছাড়া আগুনের বিষয়টি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়ার পর সেই ব্যক্তিদেরও হুমকি দিচ্ছে ওই পক্ষ।
কবিরহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শাহজালাল মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, গরুগুলোর শরীরের ৫০ শতাংশেরও বেশি পুড়ে গেছে। সেগুলোর মধ্যে দুটি জবাই করে দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলোর প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে মনে হয় না গরুগুলো বাঁচানো সম্ভব হবে। তারপরও আমাদের টিম চেষ্টা করে যাচ্ছে।
কবিরহাট থানার ওসি শাহীন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্তের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।