অন্তর্বর্তী সরকার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হচ্ছে: তারেক রহমান
অন্তর্বর্তী সরকার তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা বিচ্যুত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বার আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা’ শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম (ঢাকা বার ইউনিট) এই কর্মশালার আয়োজন করে।
তারেক রহমান বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি যে, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির কথা-বার্তা থেকে এবং বিভিন্ন ব্যক্তি আলোচনা থেকে ফুটে উঠছে যে- তারা সম্ভবত তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও ক্ষেত্র বিশেষে বিচ্যুত হচ্ছে। আর বিভিন্ন ব্যক্তির বিবৃতিতে বিভিন্ন রকমের বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে, মানুষ বিভিন্নভাবে কনফিউজড হচ্ছে। খুব স্বাভাবিকভাবে রাজনীতিতে যখন কনফিউজড থাকবে, অস্থিরতা তখন দেখা দেবে। এই অস্থিরতার কারণে প্রত্যেকটি দেশের প্রত্যেকটি মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হবে। কারণ যখনই রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকবে, রাজনৈতিক স্টেবিলিটি যদি আমরা নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে আমরা যে যতই সংস্কারের ঘোষণা করি না কেন, কোনোটাই সফল হবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, তর্ক-বিতর্ক এবং আলোচনা বলুন, সেটিকে সংসদের মধ্যে নিয়ে আসা। সংসদই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ও মূল জায়গা, সেখানে রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত- যাই হোক না কেনো, সেটি সংসদের মধ্যে হয়ে থাকে। আমরা সংসদকে কার্যকর করতে যত দেরি করব, এই অস্থিরতা, তর্ক ও বিতর্ক সংসদের বাইরে ছড়াতে থাকবে। তখন সকল জায়গায় একটা অস্থিরতা দেখা দেবে। যা সামগ্রিকভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সুতরাং দেশে দ্রুত একটা স্থিতি অবস্থা প্রয়োজন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যদি চারিদিকে তাকাই তাহলে আমরা একটি অস্থিরতা হয়তো লক্ষ্য করতে পারি। প্রত্যেক জায়গায় একটা অস্থিরতা বিরাজ করছে। এই অস্থিরতা বিরাজ করার মূল কারণ হতে পারে, স্বাভাবিকভাবে এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে। এই সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে, দেশের মানুষ যে সিদ্ধান্ত নিতে চায়- সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করা এবং মানুষকে তার সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করা। এটিই হওয়া উচিত তাদের মূল লক্ষ্য।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি প্রথম সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, এজন্য এটিকে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা আমাদের একটি পবিত্র দায়িত্ব। এই দায়িত্ব যদি পর্যায়ক্রমে পূরণ করতে হয় তাহলে অবশ্যই একটি সংসসদের প্রয়োজন আছে। কারণ সংসদ সেই একমাত্র সংস্কার প্রস্তাবকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষমত হবে।
বিএনপির রাষ্ট্রক্ষমতায় অভিজ্ঞতা আছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, অভিজ্ঞতার আলোকে সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- যদি এখন কতগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করি তাহলে এদেশকে ধ্বংস থেকে রক্ষা সম্ভব নয়। বিভিন্ন ব্যক্তি সংস্কার প্রস্তাব করছেন। যেটি খুব ভালো বলে আমি মনে করি। কিন্তু যে সময় কেউ সাহস করেনি, ঠিক সেই সময় বিএনপি এবং যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো মিলে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক এডভোকেট খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।