প্রথম কার্যদিবসেই সড়কে যানজট, ভোগান্তি

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেই সড়কে গণপরিবহন সংকট, ধীরগতি এবং যানজট দেখা গেছে। ফলে, সাধারণ যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হয়েছে। বিশেষ করে অফিসগামী ও দৈনন্দিন কাজে বের হওয়া মানুষের পরিস্থিতি ছিল দুর্বিষহ। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, নদ্দা, খিলক্ষেত,  এয়ারপোর্ট এবং উত্তরা এলাকায় এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাসের অভাবে যাত্রীরা দীর্ঘ সময় ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। যে কয়েকটি বাস সড়কে চলছে, সেগুলো অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই হওয়ায় তাতে ওঠা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আবার বাস সংকটের সুযোগে রিকশা, সিএনজি ও রাইড শেয়ারিং বাইক চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন। যা সাধারণ মানুষের জন্য আর্থিকভাবেও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যের দিকে যান। আবার, অটোরিকশা চালকদের সড়ক অবরোধের ফলে অনেক সড়কে দীর্ঘসময় ধরে যানজট এবং গাড়ি শূন্য অবস্থায় দেখা গেছে।

                       বাড্ডায় অটোরিকশাচালকদের অবরোধের কারণে দেখা দেয় গণপরিবহন সংকট । ছবি: সংগৃহীত

আব্দুর রশিদ নামে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই বাসে চলাচল করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। যানজট, বিভিন্ন আন্দোলনের কারণে সড়ক অবরোধ রাজধানীর মানুষের জন্য দুঃসহ ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সময়মতো অফিসে পৌঁছানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এখনো আধাঘণ্টা ধরে এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে আছি৷ বাসেই উঠতে পারছি না।

সালেহ উদ্দিন বাবর নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, এয়ারপোর্ট থেকে খিলক্ষেত আসতেই ব্যাপক যানজট পোহাতে হয়েছে। এরপর আবার বাড্ডার রাস্তা ফাঁকা। গাড়ি তেমন একটা নেই। গত সপ্তাহজুড়েও এমন অবস্থায় ছিল। এ অবস্থায় মহিলা এবং অসুস্থ মানুষজন আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন।

খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা আসিয়া আক্তার নামের এক নারী যাত্রী বলেন, অনেকক্ষণ পরপর গাড়ি আসছে। মানুষের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা কম। সেজন্য, গাড়ি আসলেই হুড়োহুড়ি শুরু হচ্ছে। সিট পাওয়া তো দূরে থাক গাড়িতেই ওঠা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সম্প্রতি ২১টি পরিবহন কোম্পানির ২ হাজার ৬১০টি বাসকে গোলাপি রঙ করে ই-টিকিটিং ব্যবস্থার আওতায় এনেছে। অনেক বাস রঙ করার জন্য সড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, ফলে বাসের সংখ্যা কমে গেছে। একই সঙ্গে ই-টিকিটিং ব্যবস্থার ফলে চালক ও সহকারীরা আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। এ ছাড়া, বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক পুলিশের কড়াকড়ির কারণে মামলা হওয়ার ভয়ে অনেক চালক বাস নিয়ে রাস্তায় নামছেন না।

আগারগাঁও তালতলা বাজারের সামনের সড়কে সকাল ১০টার দিকে অটোরিকশাচালকদের অবরোধ। ছবি: সংগৃহীত

আবার, গ্যাস বা পেট্রোলচালিত অটোরিকশা চালকরা মিটারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করলে জরিমানা বা কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। প্রতিবাদে রাজধানীর মিরপুর-১, মিরপুর-১৪ ও রামপুরায় সড়ক অবরোধ করেছেন অটোরিকশা চালকরা। এর ফলে গণপরিবহন সংকট এবং সড়কে ধীরগতি তৈরি হয়েছে।

You might also like

Comments are closed.