ইরানের ওপর প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বসার পর ইরানের বিরুদ্ধে প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন। ইতিমধ্যে দেশটির ওপর তিনি ‘সর্বোচ্চ চাপ’ তৈরি করার ওপরে জোর দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ওই ঘোষণা দিয়েছে। অর্থ বিভাগ বলেছে, তেহরানের ‘তেল নেটওয়ার্ক’ এ নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য।

ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেনের সময় মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, জাহাজ ও ব্যক্তিবিশেষ নতুন আরোপিত এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আওতায় পড়বে। ইরানের ওপর আগে থেকেই আরোপিত নিষেধাজ্ঞাসমূহ কার্যকর করতে নিয়মিতভাবে এ রকম পদক্ষেপ নিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে দাবি করেন, ইরান সরকার তার তেলের রাজস্ব থেকে সুবিধা আদায় করার ওপর মনোযোগ দিয়ে চলেছে; যার লক্ষ্য হলো, নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচির উন্নয়নে তহবিল জোগাড় করা, প্রাণঘাতী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ড্রোন) তৈরি এবং নিজের আঞ্চলিক ‘সন্ত্রাসী’ প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন প্রদান।

বেসেন্ট বলেন, ‘এসব অপতৎপতায় অর্থায়ন নিশ্চিত করার ইরানের যেকোনো চেষ্টা জোরালোভাবে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ইরান দীর্ঘদিন ধরে তার তেল খাতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও রপ্তানি আটকে দেওয়ার চেষ্টাকে ‘জলদস্যুতা’ বলে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

অর্থ বিভাগ বলেছে, চীন, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানও (ইরানের তেল খাতের সঙ্গে সংশিষ্ট) তেহরানের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।

বৃহস্পতিবারের এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের দুদিন আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের ওপর চাপ আরও বৃদ্ধি করতে এক নির্বাহী আদেশে সই করেন। প্রথম দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির সই হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে তাঁর দেশকে সরিয়ে নেন। এর পর থেকেই তেহরানের ওপর ক্রমাগত চাপ তৈরি করে চলেন তিনি।

আনুষ্ঠানিকভাবে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত বহুপক্ষীয় চুক্তিটি ২০১৫ সালে স্বাক্ষর করা হয়েছিল। চুক্তিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে এগিয়ে না নেওয়ার বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়।

বাইডেন এ চুক্তিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ইরানের সঙ্গে কয়েক দফা পরোক্ষ আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর তাঁর সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হলে চুক্তিটি নিয়ে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আবার লক্ষ্যচ্যুত হয়।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.