ক্যাঙারুর ভ্রূণ তৈরি, বিলুপ্তি রোধে রাখবে ভূমিকা
প্রথম ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্যাঙারুর ভ্রূণ তৈরি করেছেন অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানীরা। যুগান্তকারী এই সাফল্য অন্যান্য প্রজাতির বিলুপ্তি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষকরা বলেছেন, জীবন্ত সন্তান জন্ম দেওয়া নিশ্চিত করতে আরও কাজ এবং ‘প্রযুক্তিগত উন্নতি’ প্রয়োজন।
প্রধান গবেষক আন্দ্রেস গাম্বিনি বলেন, এটি মারসুপিয়াল প্রজাতির প্রজনন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা প্রদান করে। বিশেষত কোয়ালা, তাসমানিয়ান ডেভিল, নর্দান হেয়ারি-নোজড উম্ব্যাট এবং লিডবিটারের পসামসহ বিপন্ন প্রজাতির জিনগত বৈচিত্র্য উন্নত করতে সহায়ক হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মারসুপিয়াল স্তন্যপায়ী প্রজাতির আবাসস্থল হলেও, সেখানে স্তন্যপায়ী প্রাণী বিলুপ্তির হার সর্বাধিক।
কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণায় ক্যাঙারুর ডিম ও শুক্রাণুর বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা হয়ছিল। তারপর ইন্ট্রাসাইটোপ্লাজমিক শুক্রাণু ইনজেকশন (আইসিএসআই) পদ্ধতি ব্যবহার করে ভ্রূণ তৈরি করা হয়। ইতিমধ্যে মানুষ এবং কিছু গৃহপালিত পশুর ওপর এই পদ্ধতি পরীক্ষা করা হয়েছে।
গবেষক গাম্বিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত আইসিএসআই পদ্ধতি ব্যবহার করে ২০টিরও বেশি ভ্রূণ তৈরি করা হয়েছে। এই ভ্রূণগুলো তৈরি করতে মৃত ক্যাঙারুদের শরীর থেকে শুক্রাণু ও ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে।
গাম্বিনি আরও বলেন, ইস্টার্ন গ্রে ক্যাঙারু প্রজাতিটি আইবিএফ পরীক্ষার জন্য আদর্শ। কারণ তাদের জিনগত উপাদান পাওয়ার পরিমাণ অনেক বেশি এবং এই প্রজাতির সংখ্যা অনেক, কিছু অঞ্চলে তাদের অতিরিক্ত উপস্থিতি দেখা যায়।
আইসিএসআই পদ্ধতি ব্যবহার করে ২০ টিরও বেশি ভ্রূণ তৈরি করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
গবেষকরা বলেন, অস্ট্রেলিয়ার আইকনিক মারসুপিয়াল প্রজাতির প্রতি গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকা সত্ত্বেও তাদের টিস্যুর ওপর গবেষণা সীমিত ছিল।
ড. গাম্বিনি আরও বলেন, ‘আমরা এখন মারসুপিয়াল ডিম ও শুক্রাণু সংগ্রহ, সংস্কৃতি এবং সংরক্ষণের পদ্ধতিগুলো পরিপূর্ণ করার জন্য কাজ করছি। এ ধরনের পদ্ধতিগুলো অনন্য এবং মূল্যবান প্রাণীদের জিনগত উপাদান সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
গত বছর, কেনিয়ার বিজ্ঞানীরা আইবিএফ ব্যবহার করে এক গন্ডার প্রজাতিকে সফলভাবে গর্ভধারণে সক্ষম করেছিলেন। এটি একটি ঐতিহাসিক সাফল্য ছিল। যেখানে একটি গবেষণাগারে সৃষ্টি করা গন্ডার ভ্রূণকে একটি সারোগেট (গর্ভ দাত্রী) মায়ের গর্ভে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এই প্রচেষ্টা প্রজাতির বিলুপ্তি রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে যখন সাদা গন্ডার (নর্দার্ন হোয়াইট রাইনো) বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।