সাড়ে ছয়শ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ধুঁকছে জিলবাংলা চিনি কল

জামালপুরের জিলবাংলা চিনি কলের লোকসান বাড়ছেই। ৬৬টি আখ মাড়াই মৌসুমের মধ্যে ৪৮ মৌসুমেই লোকসান হয়েছে মিলটির। ফলে মাথায় ৬শ’ ৫৬ কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়েই ধুঁকছে চিনিকলটি।

কর্তৃপক্ষ বলছে, চিনিকলের লভ্যাংশ দিয়ে এত বড় ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব নয়। তবে লভ্যাংশ বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

জিল বাংলা সুগার মিল জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের যৌথ কারিগরি সহায়তা ও অর্থায়নে ১৯৫৮ সালে কারখানাসহ দেড়শ একর জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় মিলটি। ১ হাজার ১৬ টন আখ মাড়াই এবং ১০ হাজার ১৫০ টন চিনি উৎপাদনে সক্ষম এই মিলে প্রথম আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৫৮-৫৯ সালে। স্বাধীনতা পর ১৯৭২ সালে জিল বাংলা সুগার মিলকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত চিনিকলটি ৬৬টি মৌসুমে আখ মাড়াই কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে লাভের মুখ দেখেছে মাত্র ১৮টি মৌসুমে। আখ চাষিদের অভিযোগ, সুগার মিলের সিন্ডিকেট আর নানা জটিলতায় বছর বছর বাড়ছে লোকসানের পরিমাণ। তাদের দাবি, মিলের মূল্য নির্ধারণ, পরিশোধ জটিলতা এবং সিন্ডিকেটের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছেন চাষিরা। এছাড়াও সময় মতো আখ সরবরাহ করতে না পারায় ক্ষেতেই আখ শুকিয়ে যায় বলেও জানান তারা।

বর্তমানে জিল বাংলা সুগার মিলের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬শ’ ৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ টাকায়। বৃহৎ এই ঋণের অর্ধেকের বেশি ব্যাংকের সুদ। বিশাল এই ঋণের চাপ নিয়েই ৬৭তম মাড়াই কার্যক্রম চালাচ্ছে মিলটি।

জামালপুর দেওয়ানগঞ্জ জিল বাংলা সুগার মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ সবাইকে আহ্বান করব অন্যান্য চাষের পাশাপাশি আখ চাষ করুন। এই মিলটাকে টিকিয়ে রাখুন। আর সরকার ও শিল্প মন্ত্রাণালয় থেকে আমাদের পাঁচ বছর মেয়াদি রোডম্যাপ কার্যক্রম শুরু করেছে। আশা করছি তিন থেকে চার বছরের মধ্যে এই মিলও নো প্রফিট নো লস থাকবে।’

চিনিকলটিকে আধুনিকায়নের পাশাপাশি বহুমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা গেলে লোকসান ঠেকানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.