নাটোরের সিংড়ার চৌগ্রাম এলাকায় মসজিদের সিঁড়িতে ওসমান গনি (৬২) নামে এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। উপজেলার চৌগ্রাম পারুহারপাড়া এলাকায় শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে একটি পিস্তল ও রেইনকোট উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে অস্ত্রোপচার শেষে গুলিবিদ্ধ ওই ব্যবসায়ী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে স্বজনেরা চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিংড়া থানার ওসি মো. আসমাউল হক জানান, যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে। তবে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র দিয়ে ওই ব্যবসায়ীর ওপর হামলা হয়েছে কি-না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
গুলিবিদ্ধ ৫২ বছর বয়সী ওসমান গণি সিংড়ার চৌগ্রামের আব্দুল প্রামাণিকের ছেলে। তিনি পেশায় ধান-চাল ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, “শনিবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হন ওসমান। পরে চৌগ্রাম পারুহারপাড়া এলাকায় মসজিদে পৌছানোর পরে সিড়িঁতে উঠতেই পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার কোমরের পেছনে বাম পাশে লাগে। পরে ওসমানকে রক্তাক্ত অবস্থায় সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
আসমাউল হক জানান, বেলা ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সিংড়া ক্যাম্পের (১১ এসপি রেজিমেন্ট) একটি দল চৌগ্রামের পারুহারপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত টিনের ঘর থেকে একটি চাইনিজ পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং ১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।
ওসি বলেন, ওসমান গণি ওই উদ্ধার করা অস্ত্রেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কি-না তা এখনও আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আহতের শরীর থেকে বের করা গুলি, জব্দ করা গুলির সঙ্গে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হবে। এরপর বিস্তারিত বলা যাবে। এ ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশ কাজ করছে।
সিংড়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হওয়া পিস্তল ও রেইনকোট। ছবি: সংগৃহীত
ওসমান গনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার সকালে তার ভাতিজা দুলাল হোসেন বলেন, চাচাকে প্রথমে সিংড়া উপজেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার ক্ষতস্থানে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন।
সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, ওসমান গনিকে শনিবার সকালে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখন তার কোমরের পেছনে একটি গুলির ক্ষত ছিল। তাৎক্ষণিক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দুলাল হোসেন বলেন, ‘আমার চাচা (ওসমান গণি) সাদাসিধে মানুষ। তার সঙ্গে কারও সমস্যা আছে, এমনটা আমার জানা নাই। কে, কেন তাকে গুলি করল, তা বুঝে উঠতে পারছি না। ঘটনার পরপরই চাচা মুসল্লিদের জানিয়েছেন, রেইনকোট পরিহিত এক লোক পেছন থেকে গুলি করে পালিয়েছে।’