মঞ্চে ফিরেই অসুস্থ সাবিনা ইয়াসমিন, হাসপাতালে ভর্তি

দীর্ঘদিন পর শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) মঞ্চে ফিরেন কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। তবে মঞ্চে গান গাওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তখনই তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সাবিনার মেয়ে ইয়াসমিন ফায়রুজ বাঁধন।

বাঁধন গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন পর আম্মু আজ (শুক্রবার) মঞ্চে গান শুরু করেন। তবে গানের মাঝপথে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আম্মুর মাথাব্যথা শুরু হয়। পরে তৎক্ষণাৎ তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই মায়ের চিকিৎসা চলছে।

এক বছরের বেশি সময় ধরে গানের মঞ্চের বাইরে কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। এই দীর্ঘ সময়ে গায়িকা ব্যস্ত থেকেছেন বিদেশ বিভুঁইয়ে রোগব্যাধি ও চিকিৎসার সঙ্গে। কারণ শরীরে ক্যান্সার ফিনরেছিল তার।

প্রথম দফায় ২০০৭ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই সংগীতশিল্পী। পরে চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে এবং গানেও ফিরেছিলেন। মাঝের বছরগুলোয় কেবল দেশে নয়, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে স্টেজ শো করেছেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফের সাবিনার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে। দেশের পাশাপাশি ভারতীয় গণমাধ্যমেও প্রকাশ হয়েছিল এই খবর। পরে দেশবাসীর উদ্দেশে এক বার্তায় সিঙ্গাপুরে তার চিকিৎসা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন সাবিনা। তিনি বলেছিলেন গত ৭ ফেব্রুয়ারি তার দাঁতে ছোট একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। তারপর পুরোপুরি সুস্থ হতে তাকে অনেকগুলো রেডিওথেরাপি নিতে হয়েছে।

কিছুদিন আগে সাবিনা ফিরে এসেছেন ঢাকায়। এর মধ্যে গত ৪ জানুয়ারি ঢাকাই সিনেমার অভিনেত্রী অঞ্জনা রহমানের মরদেহ চ্যানেল আই প্রাঙ্গনে নেওয়া হলে, সেখানে এসেছিলেন সাবিনা। ছেলেবেলার বান্ধবী অঞ্জনাকে নিয়ে পুরনো স্মৃতি সেদিন সাবিনা তুলে ধরেন সংবাদকর্মীদের সামনে।

সাবিনার জন্ম ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, ঢাকায়। পৈতৃক নিবাস সাতক্ষীরায়। বেড়ে উঠেছেন সংস্কৃতিমনা পরিবারে। বাবা লুতফর রহমান ও মা মৌলুদা খাতুনও গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাবিনার পাঁচ বোনের মধ্যে ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিনও গানের জগতের মানুষ।

দশ হাজারেও বেশি গান কণ্ঠে তুলেছেন সাবিনা ইয়াসমিন। গীতিকার নয়ীম গহরের লেখা ও সুরকার আজাদ রহমানের সুরে সাবিনা ইয়াসমিনের গাওয়া দেশাত্মবোধক গান ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’ একাত্তরের রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছিল।

সংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার ও ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.