বিগত সরকারের ভুল নীতিতে ভুগছে জ্বালানি খাত: সিপিডি

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার অনেক উদ্যোগ নিলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি আনার মতো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ। বিগত সরকারের ভুল নীতিতে জ্বালানি খাত ভুগছে বলেও তুলে ধরে সিপিডি। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মত দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকারি এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কাছে পিডিবির পাওনা ২১ হাজার কোটি টাকা । আদানির বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বকেয়া প্রায় ৮ হাজার ৪শ কোটি টাকা। প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলএনজি আমদানির জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে পেট্রোবাংলার। সিপিডি বলছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ঋণের দুষ্টচক্রে আটকে পড়েছে, আর এজন্য দায়ী আগের সরকারের নীতিকাঠামো দায়ী। একইসঙ্গে এলএনজি সরবরাহে অন্তর্বর্তী সরকারের নেয়া পদক্ষেপের সমালোচনা করে সংস্থাটি।

সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহকারী হেলেন মাশিরাত প্রিয়তী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের জায়গা থেকে যদি আমরা চিন্তা করি তাহলে এলএনজির এই চুক্তি করাটা আসলে কোনোভাবেই যায় না। একে আমরা কাতার ও ওমানকে তাদের বকেয়া দিতে পারছি না। তার ওপরে আবার এলএনজি চুক্তি করছি অন্যদিকে আমার যে আরো ৯টা অঞ্চলে ওয়ার্কওভার করার কথা আমি সেখানে বলছি সেটার টাকা নেই। বিডার চেয়ারম্যান এ ধরনের চুক্তি করতে পারেন কিনা সেটা নিয়েও একটা প্রশ্ন আছে কারণে এবারই প্রথম জানতে পারলাম এটা নিয়ে বিডার চেয়ারম্যান এই চুক্তি করেছেন।’

সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা পূরণের চ্যালেঞ্জ নিয়ে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সংস্থাটি অর্থনীতির নানা পর্যালোচনা তুলে ধরে। তারা বলছে, ৮ আগস্টের পর খাতভিত্তিক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি আনার মতো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আর্থিক সংকুলানের ক্ষেত্রে যে ন্যায্যতা তা বিনষ্ট করা উচিত নয়। এই যে কর বাড়িয়ে বিশেষ করে পরোক্ষ কর বাড়িয়ে যদি আমরা আর্থিক প্রবাহ ও সংকুলানের বিষয়টি মোকাবেলা করে তাহলে সেটা কিন্তু জনগণের ওপর বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার মতো হবে।’

মোস্তাফিজুর রহমান

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কিছু পদক্ষেপ অনেক সময় মনে হচ্ছে জনগণের স্বার্থের বিপরীতমুখী। আর্থিক দিক থেকে একটা প্রত্যাশার চাপ এটা অস্বীকার করা যাবে না। গত তিন বছরে মূল্যস্ফীতির চাপে কেবল প্রান্তিক মানুষ নয়, স্থির আয়ের মানুষ ও নিম্ন মধ্যবিত্তরাও বড় ধরনের চাপের মধ্যে রয়েছে।’

 

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.