কৃত্রিম আলো: `ঝলমলে ঢাকা’ কেড়ে নিচ্ছে জীবজগতের ঘুম!

১৯০১ সালে থেকে বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহারের পর কালের পরিক্রমায় এসেছে আধুনিক প্রযুক্তি। আলো ঝলমল তিলোত্তমা ঢাকা যেন রাতে আর ঘুমায় না। সূর্যাস্ত থেকে ভোর পর্যন্ত নতুন রূপে সাজে রাজধানী। কৃত্রিম আলোর সঙ্গে ধুলাদূষণ মিলে ধূসর করছে ঢাকার বায়ুমণ্ডল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আলো দূষণ উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্যও ক্ষতিকারক। এর ফলে দৈনিক প্রকৃতিতে যে স্বাভাবিক আলোকচক্র থাকার কথা তার ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ফলে জীবজগতে ঘুম, বৃদ্ধি কিংবা প্রজননে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হচ্ছে। পৃথিবীর দুই-তৃতীয়াংশ জীববৈচিত্র্য এ আলো দূষণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

রাতের আকাশের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য একদিকে নগরায়ন এবং অন্যদিকে ঘরের বাইরে এলইডি লাইটের ব্যবহার বৃদ্ধি অনেকাংশে দায়ী। এছাড়া ধীরে ধীরে অন্ধকারাচ্ছন্ন আকাশ হারিয়ে যাওয়া এবং পৃথিবীকে কেন্দ্র করে কৃত্রিম স্যাটেলাইটের পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে জ্যোতির্বিদ্যায়ও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

কৃত্রিম আলো দূষণের দিক থেকে বিশ্বে পঞ্চম অবস্থানে ঢাকা। প্রতি বছর প্রায় সাড়ে দশ শতাংশ হারে বাড়ছে উজ্জ্বলতার বিস্তার। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে উদ্ভিদ ও প্রাণি। নষ্ট হচ্ছে প্রকৃতির জীবনচক্রের ভারসাম্য।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েলেসলি কলেজের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও সহকারী অধ্যাপক লামীয়া মওলা বলেন, কৃত্রিম আলো দূষণের দিক থেকে বিশ্বে পঞ্চম অবস্থানে ঢাকা। প্রতি বছর প্রায় সাড়ে দশ শতাংশ হারে বাড়ছে উজ্জ্বলতার বিস্তার। শহরের তুলনায় গ্রাম ও উপকূলে রাতের আকাশ অনেক স্বচ্ছ। সেখানে টেলিস্কোপে তোলা যায় গ্যালাক্সি, নেবুলাসহ মাহাকাশের বিচিত্র সব ছবি।

অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আশরাফ দেওয়ান বলেন, কৃত্রিম আলো দূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় জীববৈচিত্র্যের। পরিযায়ী ও নিশাচর পাখির জীবনচক্র ব্যাহত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুই-তৃতীয়াংশ উদ্ভিদের পরাগায়ন প্রাণির জীবনচক্রে।

You might also like

Comments are closed.