`বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতিত হচ্ছে না’

ট্রেসি অ্যানকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতিত হচ্ছে না, এটি ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার বলে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, সংখ্যালঘু শব্দটা আমরা ব্যবহার করতে চাই না। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক ও সবার সমান অধিকার রয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর যে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, সেটি মূলত রাজনৈতিক কারণে—ধর্মীয় নয়।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই নেতৃত্বের ভূমিকায় রয়েছে। তারা ইতোমধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করেছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি পুনর্বাসনের আহ্বান জানাই।

ট্রেসি জানান, যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উন্নয়ন ও পুনর্বাসনে বৃহত্তম দাতা। যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএস-এইড বাংলাদেশের স্থানীয় এনজিওদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে প্রায় ১৭ হাজার রোহিঙ্গার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে এবং এই প্রক্রিয়া চলমান।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ইস্যু, সন্ত্রাস দমন, রোহিঙ্গা সমস্যা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পারস্পারিক সহযোগিতা, পুলিশ সংস্কার কমিশন, সীমান্ত পরিস্থিতি, সংখ্যালঘু ইস্যু, কৃষি খাতে সহযোগিতা এবং পারস্পারিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম বড় অংশীদার। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যায়। সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।

তাছাড়া পুলিশসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামর্থ্য বৃদ্ধিতে তারা উন্নত প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র প্রদান করে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে আসছে, যোগ করেন তিনি।

এ সময় তিনি মানবাধিকার ইস্যুতে পুলিশ এবং মানব পাচার ইস্যুতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে আরও বেশি প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে—অঙ্গীকার করে ট্রেসি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের আগের চেয়ে শতকরা ৩০ শতাংশ বেশি অনুমতি দিচ্ছি। আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের আরও বেশি প্রশিক্ষণ দেবো। তবে কর্মকর্তারা যেন প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে এসে স্ব স্ব পদে কর্মরত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। আগামী মাসে এ বিষয়ে দিল্লিতে দুদেশের মধ্যে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.