ন্যূনতম সংস্কার করে নির্বাচন হলে সমস্যার কিছু সমাধান হবে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখনই নির্বাচন করে ফেলতে হবে, আমরা তা তো বলছি না। ন্যূনতম সংস্কার করে নির্বাচন হলে সমস্যার কিছু সমাধান হবে।’ মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ‘গ্রন্থ আড্ডা’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংস্কারের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা খুব শিগগির এসব বিষয় নিয়ে আমাদের ডাকবেন, একটা সমাধানের দিকে আসবেন, আলোচনা হবে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাব।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে অনেকে ভুল বোঝে বলে থাকেন, আপনি এত নির্বাচন নির্বাচন করেন কেন? হ্যাঁ আমাকে, বিশেষ করে ছাত্ররা তো বলেই। এখানে নির্বাচন বলার কারণটা হচ্ছে একটাই এবং আমরা বিশ্বাস করি, যেকোনো নির্বাচিত সরকার কিন্তু অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো। আমার অ্যাকসেস থাকে, আমি যেতে পারি, কথা বলতে পারি..এখন আমার সেই জায়গাটা নেই।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘নির্বাচনের কথা এ জন্য তাড়াতাড়ি বলি যে নির্বাচনটা হলে দেশের সমস্যাগুলো চলে যাবে। এখানে আপনার একটা নির্বাচিত সরকার, সে একটা পিপলস ম্যান্ডেট নিয়ে বসবে…এরা (অন্তর্বর্তী সরকার) তো এখন বসতে পারিনি। ওদের মধ্যে যে কনফিডেন্স, সেই কনফিডেন্স তো নাই। জনগণের ভাষাটা তো বুঝতে হবে। সেটা আপনার একটা নির্বাচিত সরকার সবচেয়ে ভালো বোঝে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
‘ধৈর্য ধরুন’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ধৈর্য ধরে যাই, সামনের দিকে যাই। অনেক ত্রুটি আছে, আমি বিশ্বাস করি অনেক ত্রুটিকে তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) তুলে নিয়ে এসেছেন। তারা একটা জঞ্জালের মধ্যে এসেছে, ধ্বংসপ্রাপ্ত জঞ্জাল। আমার ধারণা ছিল না, এত খারাপ হয়ে গেছে। এই পরিবর্তনের পরে আমরা যখন দু–একটা জায়গায় খোঁজখবর নিই, অফিস-আদালতে খোঁজ-খবর নিই। একটা ভয়াবহ কাণ্ড, দুর্নীতি-চুরি ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া আর কোনো চিন্তা নেই, সরকারি আমলাদের মতো…বলতে আমি বাধ্য হলাম দুঃখিত।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থার পরিবর্তন তো এক দিনে হবে না, দ্রুত হবে না। ধৈর্য ধরুন, গণতান্ত্রিক একটা স্ট্রাকচার (কাঠামো) খাড়া হোক, সেই স্ট্রাকচার খাড়া হলেই নিশ্চয়ই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব। কখনো ধৈর্য হারাবেন না, কখনো আশা হারাবেন না। কেন যেন জানি না, আমাদের প্রত্যাশা অনেক কিন্তু ধৈর্য একেবারেই কম।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই তো কয়েক মাস হয়েছে। এর মধ্যে সব পাগল হয়ে গেছে। দেখেন, আমাদের এই সরকার অনেক ভুল-ত্রুটি করছে…ভুল তো করবেই। কারণ, তারা তো রাজনীতি জানে না, বোঝে না। তাই তাদের তো সেই সময় দিতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘এখন প্রতিদিন দাবিদাওয়া নিয়ে মিছিল বের হচ্ছে, এত দিন কোথায় ছিলে বাবা? তখন তো একটা কথা বলার কেউ সাহস, সুযোগও পাওনি। আর এখন যেহেতু একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে, সবাই নেমে গেছ।’
জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্রনেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আফরোজা খানম, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, শিক্ষকনেতা জাকির হোসেন, সমাজকর্মী সাইয়িদ আবদুল্লাহ, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের জহির দিপ্তী, মঞ্জুর এলাহী, কাজী জহিরুল ইসলাম, হাসান আল আরিফ প্রমুখ বক্তব্য দেন।