নেই মানসম্মত সিনেমা, তাই বন্ধ ‘মধুমিতা’
মানসম্মত সিনেমা অভাবে দেশের ঐহিত্যবাহি সিনেমা মধুমিতা হলটি বন্ধ রয়েছে। আগে একাধিকবার এটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হলেও এবার দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে বন্ধ।
হলটি কর্ণধার এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি, প্রযোজক ইফতেখার নওশাদ জানান, নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে মধুমিতা বন্ধ রাখা হয়েছে। আপাতত আর খোলার ইচ্ছে নেই।
গেল ঈদুল আজহায় শাকিব খান অভিনীত ‘তুফান’ রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করে। অতীতের ব্যবসায়িক ক্ষতির হিসেব অনেকটাই পুষিয়ে মুখে হাসি ফুটায় ‘তুফান’। এমনকি টানা দেড় মাসব্যাপী ছবিটি হাউজফুল দিয়েছিল। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে সেই ব্যবসা দীর্ঘায়িত হয়নি।
নভেম্বরে শাকিবের আরেক ছবি ‘দরদ’ দিয়ে ফের জেগে ওঠে মধুমিতা। ইফতেখার নওশাদ বলেন, ‘দরদ’ প্রথম সপ্তাহে খুব ভালো চলেছিল। কিন্তু পাইরেসি হয়ে যাওয়ায় ‘সেকেন্ড উইক’ থেকে সেভাবে চলেনি। এরপর থেকে মধুমিতা বন্ধ করে দিয়েছি।
নওশাদ আরও বলেন, নভেম্বরের পর যেসব সিনেমা চলেছে সেগুলো সিনেপ্লেক্সেও ব্যবসা করেনি। আমার এখানে চালাতে লাভ তো দূরে, বিদ্যুৎ বিলও উঠতো না। তাই মধুমিতা হল বন্ধ করে দিয়েছি।
ইফতেখার নওশাদ
নওশাদ বলেন, যেহেতু দেশের ছবি নেই, তাই অনেক আশায় ছিলাম ‘পুষ্পা ২’ চালাবো। একসঙ্গে মুক্তি দিতে পারলে আমার বিশ্বাস, ছবিটা ভালো যেত। কিন্তু আমাদের দেশে মুক্তি আটকে দেয়া হয়। এখন ঈদের আগে আর ছবি ব্যবসা করার সম্ভাবনা দেখছি না। এ কারণে হল খোলার ইচ্ছেও আর নেই। আমি নিজে পাকিস্তানের কিছু সিরিয়াল দেখেছি। খুব ভালো। যদি আমাদের দেশে চালানো যেত তাহলে হয়তো ভালো হতো। ২৪ জানুয়ারি মোশাররফ করিমের একটি ছবি (বিলডাকিনী) আসছে, ইন্ডিয়ান নায়িকা রয়েছে। ডিরেক্টর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। হল ভাড়া নিতে চায়। যদি ঠিকঠাক হয় তবে তাহলে হয়তো ওই কদিন খুলে রাখবো, নইলে মধুমিতা বন্ধই থাকবে।
নওশাদ বলেন, খুব কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছি, কোটি টাকা দিয়ে হল রেনোভেট করে হিন্দি ছবি যে আনবো সেটাও কোনো গ্যারান্টি নেই। কারণ, সব ছবি সুবিধা করতে পারছে না। ওদিকে দেশের ছবিও হলে চলছে না। এসব কারণে হয়তো মধুমিতা চিরতরে বন্ধ করে দেব। সিনেমা আমার অনেক ইমোশনের জায়গায় ছিল। কিন্তু বছরের পর বছর এভাবে লোকসানের ঘানি আর টানতে পারছি না। শুনেছি লায়নও হয়তো বন্ধ করে দেবে।