চা-শ্রমিকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান সারজিস আলমের
বাগানের মদের পাট্টাগুলো ভেঙে ফেলুন
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ব্রিটিশরা চক্রান্ত করে মদ খাইয়ে চা–শ্রমিকদের মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে গেছে। চা–বাগানের ভাইদের কাছে অনুরোধ, কলিজাটা বড় করে চা-বাগানের মদের পাট্টাগুলো ভেঙে ফেলুন। মাথা যদি ঠিক থাকে, কেউ মাথা কিনতে পারবে না।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কুরমা চা-বাগানে চা-শ্রমিক সমাবেশে সারজিস আলম এ কথা বলেন। ব্রিটিশদের কিছু নীলনকশা ছিল উল্লেখ করে সমাবেশে তিনি আরও বলেন, সাদা চামড়ার এই মানুষেরা চলে গেছে; কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে গেছে। চা–বাগানে এখনো মদের পাট্টা আছে। এগুলো একটা চক্রান্ত। চা–বাগানের ভাইয়েরা যেকোনো বৈষম্যে সিনা টান করে লড়াই করার কথা ছিল, সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু ব্রিটিশরা চক্রান্ত করে মদ খাইয়ে আমার ভাইদের মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে গেছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আয়োজনে এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চা–শ্রমিক ইউনিয়নের মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি। এতে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ, চা–শ্রমিক নারীনেত্রী গীতা কানু, খায়রুন আক্তার প্রমুখ।
সমাবেশে সারজিস আলম আরও বলেন, এই যে ১৬ বছর ধরে উন্নয়নের গল্প বলতে বলতে মনে হচ্ছিল, আমরা যেন আর বাংলাদেশে নেই, আমরা মঙ্গল গ্রহে বাস করছি। এই উন্নয়ন কোথায়? শেখ হাসিনার চোখ কি টুঙ্গিপাড়া ছাড়া চা–শ্রমিকেরা যেখানে থাকেন, সেখানে পড়েনি? এই শ্রমিকেরা যে রেশন পান, সেই রেশন ও মজুরি পর্যাপ্ত নয়। এত কষ্ট করে কাজ করেন তাঁরা, আমার চা–শ্রমিক বোনদের চেহারা এ রকম থাকার কথা নয়।’
চা–শ্রমিকদের উদ্দেশে সারজিস আলম আরও বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের ভালো করে পড়াশোনা করান। আপনাদের মতো যেন তারা কষ্ট না করে। যদি চা–বাগানের কোনো শিক্ষার্থী টাকাপয়সার জন্য সমস্যায় পড়ে, আমরা তার খরচ বহন করব। সেটা এক হাজার শিক্ষার্থী হলেও আমরা করব। এই জানুয়ারির মধ্যেই আমরা চা–শ্রমিকদের নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করব। সেখান থেকে আমরা চা–শ্রমিকদের সব কিছু সমাধানের চেষ্টা করব।
সমাবেশে নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। এর অর্থ হচ্ছে, আমরা আমাদের জন্য নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান করব। সেই সংবিধানের জন্য চা–শ্রমিকদের কথা তুলে ধরার জন্য আপনাদের প্রতিনিধি আপনারা পার্লামেন্টে পাঠাবেন। আপনারা প্রস্তুতি নেন, আপনাদের বঞ্চনার কথা বলার জন্য নতুন বাংলাদেশে কেউ যেন আপনাদের এড়িয়ে যেতে না পারে। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। রাষ্ট্রের কাছে আমরা সব অধিকার চাই।