পার্কিং: সড়কে বাড়তি চাপ, বাড়ছে ভোগান্তি
রাজধানীর বিভিন্ন অফিস, শপিং মল এমনকি অনেক বাড়িতেও পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় সড়কেই রাখা হচ্ছে গাড়ি। এতে চারলেনের রাস্তার ২ লেনই যাচ্ছে পার্কিংয়ে। ফলে সড়ক সরু হয়ে তৈরি হচ্ছে বাড়তি চাপ;সৃষ্টি হচ্ছে জনভোগান্তি ও যানজট। এ অবস্থায় গণ পরিবহনের মান বাড়িয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার প্রতি নিরুৎসাহিত করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মানুষ, গাড়ি আর ভবনের চাপে চিরে চ্যাপ্টা তিলোত্তমা ঢাকা। শখের গাড়ি বা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে যানবাহন কেনার মানুষও কম নয় এই শহরে। কিন্তু তিলোত্তমা কি এত গাড়ির চাপ সামাল দিতে পারে? দখলে রয়েছে সরু ব্যস্ততম সড়ক, বাজার-মার্কেট বা অফিস ভবনের সামনে চলার পথে পার্কিং করা গাড়ি- এসবই প্রতিদিনের নিত্যসঙ্গী।
বিশেষ করে ব্যস্ততম ব্যাংক পাড়া মতিঝিলের প্রায় সব সড়কে অবৈধ পার্কিং। যেকারণে সকাল-বিকেল সবসময়ই সড়কে দেখা যায় বিশৃঙ্খলা ও তীব্র যানজটের ভোগান্তি, নষ্ট হচ্ছে কর্ম ঘণ্টা।
রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিলকে বলা হয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। স্বাধীনতার পর এমনকি গত দুই দশকে এ এলাকায় একের পর এক গড়ে উঠেছে অসংখ্য সুউচ্চ ভবন। অথচ অর্থনীতির চালিকায় সরাসরি ভূমিকা রাখা মতিঝিলে নেই পরিকল্পিত পার্কিং ব্যবস্থা। সমস্যাটি ঠিক আর কতটা গুরুতর হলে কর্তৃপক্ষের নজরে আসবে, প্রশ্ন জনসাধারণের।
ট্রাফিক বিভাগের তথ্যমতে, ঢাকার রাস্তায় মাত্র ৩ হাজার ট্রাফিক সদস্য কাজ করছেন। দুই কোটির বেশি মানুষের এই নগরীতে যা খুবই নগণ্য।
তবে যে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবৈধ পার্কিং বন্ধ করা- খোদ সেই সিটি করপোরেশনই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দিচ্ছে পার্কিং ইজারা। সম্প্রতি পটপরিবর্তনে বদলেছে ইজারা কিন্তু পাল্টেনি মতিঝিলের অবৈধ পার্কিং। দৈনিক ১০ জনকে দিয়ে চার্জ আদায় করে গাড়ি পার্কিং করাচ্ছেন ইজারাদার।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ পরিকল্পনাগুলো আমরা আমাদের নগর পরিকল্পনাবিদদের মাধ্যমে গ্রহণ করে থাকি। যানবাহন চলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হলে, সেক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’
সাধারণ বীমা টাওয়ারে প্রায় ছয়শ’র অধিক গাড়ি রাখার কথা থাকলেও থাকছে মাত্র ১২০ গাড়ি। আর সিটি সেন্টারে পাঁচশর জায়গায় গাড়ি থাকছে ১৩০টি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণপরিবহনের মান বাড়িয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি কেনায় নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি পার্কিং চার্জ বাড়ানোর উদ্যোগ নিলে কমে যাবে এ সমস্যা।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল হক। ফাইল ছবি
পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এম শামসুল হক বলেন, বিজ্ঞানভিত্তিক কিছু চিন্তা করছে না। ভাবছে পার্কিং তো হচ্ছে এখানে থেকে আমি কিছু পয়সা পাই। আমিতো কালেক্ট করতে পারবো না, আমি একজন কাউকে দিয়ে দেই। এই যে দিয়ে দিলাম সে কিন্তু একটা অফিশিয়াল অথরিটি পেয়ে গেল। সে তখন এটাকে এক লেয়ার না তিন লেয়ারে দিবে। এ জায়গায় যদি শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলেই একমাত্র টেকসই হবে।