ফের দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারীরা

ছিনতাইকারীরা ফের দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছে রাজধানীতে। প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ছিনিয়ে নিচ্ছে সবকিছু। আড়াই মাসে ৫৪ ছিনতাই মামলার বেশিরভাগের চিত্রই এক।

১৭ ডিসেম্বর ভোর ৪টা ৩২ মিনিটি। রাজধানীর কলাবাগানের লেকসার্কস ডলফিন গলি। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এক দম্পতি। মোটরসাইকেলে এসে বড় চাপাতি বের করে মহিলার কাঁধে থাকা ব্যাগের বেল্ট কেটে ছিনিয়ে নেয় সেটি। চাপাতির ভয় দেখিয়ে নিয়ে নেয় সঙ্গে থাকা সব কিছুই। ছেলেটির ফোন ছিনিয়ে নিতে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে ছিনতাইকারীরা।

কলাবাগান থানার লেক সার্কাস ডলফিন গলিতে চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪ চোর-মো. সোহেল, মো. ফরহাদ, মো. ইলিয়াস শেখ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এদের কলাবাগান ও আদাবর থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছবি:সংগৃহীত

ভুক্তভোগী জ্যোতি বসু চাকমা বলেন, তিনজন আমাদের সামনে আসে। দুজনের হাতে চাপাতি ছিল। তারা আমার স্ত্রীকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। তার কাছ থেকে মোবাইল ও হাতে থাকা আংটি নিয়ে নেয়।’

এ ঘটনার ফুটেজ খুঁজতে গিয়ে একই জায়গায় ১৪ ডিসেম্বর ভোরেও এক নারীকে হেনস্তা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনাও সামনে আসে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষার্থী রবি। রাজধানীর আসাদগেটে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গেলে গত ২১ ডিসেম্বর রাতে প্রকাশ্যেই চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ছিনতাইকারীরা তার সব ছিনিয়ে নেয়।

ভুক্তভোগী এনামুল হক রবি বলেন, বাম হাতে গভীরভাবে কেটেছে। মাথা ও হাতে ২৪টি সেলাই পড়েছে।

ডিএমপির তথ্য বলছে, অক্টোবরে রাজধানীতে ছিনতাইয়ের মামলাই হয়েছে ২০টি। নভেম্বরে ২৭টি। আর ডিসেম্বের ১০ দিনে ৭টি। গত চার মাসে ছিনতাইকারীর হাতে প্রাণ গেছে সাতজনের। অপরাধ বিশ্লেষকেরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় বেপরোয়া হয় উঠেছে ছিনতাইকারীরা।

সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে জোরালো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না। যখন এই ধরনের বাস্তবতা তৈরি হবে, তখন অপরাধ প্রবণতা বাড়বে।’

ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান পিপিএম। ছবি: সংগৃহীত

ডিএমপির গণমাধ্যম বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, অপরাধ নিমূর্লে আমাদের তৎপরতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা শাখার সদস্যরাও কাজ করছে। আপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি।’

ছিনতাই প্রতিরোধে চেকপোস্ট ও টহল বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

You might also like

Comments are closed.