প্রাণীর ছবিযুক্ত জামা পরে নামাজ হবে কি?

নামাজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। এটি আদায় করা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের জন্য ফরজ। এছাড়া ওয়াজিব ও সুন্নত নামাজের বাইরে কিছু নফল নামাজও আছে। যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, সময়মতো নামাজ পড়া প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজ। তবে অনেকে জানতে চান, প্রাণীর ছবিযুক্ত জামা পড়ে নামাজ হবে কি?

এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, নামাজে হোক বা নামাজের বাইরে– সর্বাবস্থায় প্রাণীর ছবিযুক্ত পোশাক পরিধান করা মাকরুহে তাহরিমি বা হারাম। তবে, নামাজের সময় কোনো কাপড় দ্বারা ওই ছবি ঢাকা থাকলে নামাজ মাকরুহ হবে না। সুতরাং ছবিযুক্ত কাপড় পরে নামাজ পড়লে তা আদায় হবে ঠিকই, কিন্তু মাকরুহে তাহরিমিতে লিপ্ত অবস্থায় নামাজ পড়ার কারণে গুনাহ হবে।

হাদিসে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) একবার একটি ছবিযুক্ত গদি ক্রয় করলেন। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা দেখলেন। তখন তিনি দরজায় দাঁড়িয়ে গেলেন, ঘরের ভেতর প্রবেশ করলেন না…। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই যারা এসব ছবি নির্মাণ করে কেয়ামতের দিন তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। তাদেরকে বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ তাতে জীবন দান করো। তিনি আরো বলেন, নিশ্চয়ই যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফিরিশতা প্রবেশ করে না। (বুখারি: ৫৯৫৭)

বিখ্যাত ফতোয়াগ্রন্থগুলোতে বলা হয়েছে- কাপড়, বিছানা, মুদ্রা, বাসনকোসন, দরজা বা অন্য যেকোনো কিছুতে প্রাণীর ছবি আঁকা হারাম। তবে প্রাণহীন বস্তু যেমন- বৃক্ষ, পাহাড়, ঝর্ণা ইত্যাদির ছবি বৈধ। (আল-বাহরুর রায়েক: ২/২৯, ২/২৭; মেরকাতুল মাফাতিহ: ৪৪৮৯)

অনেকে মনে করেন, ছবিযুক্ত পোশাক পরিধান করা শুধু নামাজের ক্ষেত্রে হারাম! ফলে তারা নামাজের সময় এ ব্যাপারে খেয়াল রাখলেও অন্য সময় উদাসীন থাকে। অথচ এ ধারণা ভুল। সব সময় ছবিযুক্ত পোশাক পরিধান করা হারাম। তবে হ্যাঁ, নামাজে এমন পোশাক পরিধান করা গর্হিত অপরাধ।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.