যুক্তরাষ্ট্রে ‘ওপেন এআই’র তথ্য ফাঁসকারী তরুণের মৃত্যু

মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ২৬ নভেম্বর, এতদিন গোপন ছিল সে তথ্য প্রকাশ করেনি পুলিশ

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) উৎপাদনকারী কোম্পানি ওপেন এআইর সাবেক কর্মী ও দুর্নীতির তথ্য ফাঁসকারী ভারতীয় তরুণ সুচির বালাজির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ফ্রান্সিসকো শহরের বুচানন স্ট্রিটে বালাজির নিজ ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এ খবর ছেপেছে দ্য ইকোনোমিক টাইমস।

মার্কিন এই সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গত ২৬ নভেম্বর উদ্ধার করা হয়েছে বালাজির মৃতদেহ। তবে এতদিন তা গোপন রাখা হয়েছিল। কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে— সে সম্পর্কিত কোনো তথ্যও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করেনি পুলিশ। সান ফ্রান্সিসকো পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যমে জানানোর মতো কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত তাদের হাতে নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওপেন এআই বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি। বর্তমান বিশ্বে ব্যাপকভাবে পরিচিত এবং জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাট জিপিটি এই কোম্পানিরই পণ্য। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক সুচির ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ওপেন এআইয়ের কর্মী ছিলেন।

                         গত ৩ অক্টোবর সান ফ্রান্সিসকো থেকে তোলা সুচির বালাজির ছবি:সংগৃহীত

গত আগস্টে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনেকটা আকস্মিকভাবেই ওপেন এআইয়ের বিরুদ্ধে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটান বালাজি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন চ্যাট জিপিটি প্রস্তুত ও বাজারজাত করণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কপিরাইট আইনের গুরুতর লঙ্ঘণ করেছে ওপেন এআই।

সাক্ষাৎকারে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদককে সুচির বলেছিলেন, আপনি যদি ওপেন এআইয়ের কর্মী হতেন, তাহলে আমি যা জানি, তা জানার পর নিশ্চিতভাবেই আপনি সেই কোম্পানি ত্যাগ করতেন। তারা যেভাবে ব্যবসা করছে, সেটি কোনোভাবেই ইন্টারনেট ইকোসিস্টেমের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।

সেই সাক্ষাৎকারের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একাধিক বার্তায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছিলেন সুচির বালাজি। সর্বশেষ পোস্টে তিনি বলেছিলেন, বিভিন্নভাবে চ্যাট জিপিটিরও অপব্যবহার হচ্ছে, যা অদূর ভবিষ্যতে এই খাতের বাণিজ্যকে ঝুঁকিতে ফেলবে।

প্রসঙ্গত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার উস্কে দেওয়ার অভিযোগে ২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ওপেন এআইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। সুচির বালাজির স্বীকারোক্তি সেসব মামলার বিচারকাজে নতুন গতি যোগ করেছিল।

এদিকে বালাজির মরদেহ উদ্ধারের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর জন্য গভীর শোক জানিয়েছে ওপেন এআই। প্রতিষ্ঠানটির এক মুখপাত্র বিবৃতিতে বলেছেন, এই হৃদয়বিদারক সংবাদে আমাদের গভীর শোকাহত।  সুচিরের স্বজনরা এখন কঠিন সময় পার করছেন। আমাদের হৃদয় তাদের সঙ্গে রয়েছে।

You might also like

Comments are closed.