দুই চোখে ১২ গুলি, এখনো হাসপাতালে ওমর

ছাত্র-জনতার আন্দোলন

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। তবে এর আগে ক্ষমতার টিকে থাকতে মরণ কামড় দেয় সরকার। পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীকে লেলিয়ে দেয় জনতার ওপর। তারা সাধারণ মানুষের ওপর নারকীয় হামলা চালায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। পতনের মাত্র একদিন আগে ৪ আগস্ট গাজীপুর আনসার ক্যাম্প এলাকায় যে নারকীয় ঘটনা ঘটে, এর সাক্ষী হয়ে আছেন ওমর ফারুক।

সরকার পতনের মধ্য দিয়ে নতুন দেশের জন্ম হয়েছে। তবে সে দেশ দেখতে পাচ্ছেন না ২১ বছরের এই যুবক। পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি ওমর ফারুকের দুই চোখের আলো কেড়ে নিয়েছে। তার দুই চোখে মোট ১২টি গুলি লাগে।

ঘটনার প্রায় পাঁচ মাস পরেও ওমর ফারুক এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে। হাসপাতালটির চতুর্থ তলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত চক্ষু রোগীদের চিকিৎসা চলছে৷ সেখানে ২২নং বিছানায় শুয়ে আছেন ওমর ফারুক।

ওমর ফারুক জানান, তার গ্রামের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায়। ৪ আগস্ট গাজীপুর আনসার ক্যাম্প এলাকায় পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত হন তিনি। পুরো শরীরে আঘাত করে ক্ষুদ্র বুলেট। আঘাত লাগে দুই চোখেও। আমার ডান চোখে ৭টা আর বাম চোখে ৫টা গুলি লাগে।

চোখের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে ওমর বলেন, সামনে দিয়ে কেউ গেলে বুঝতে পারি, কেউ এমন বা কিছু একটা যাচ্ছে৷ কিন্তু দেখতে পাই না।

ওমর ফারুক বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিকস বিভাগে ডিপ্লোমার শিক্ষার্থী। তবে দুই চোখের আলো চলে যাওয়ার পর থমকে গেছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন। তিনি বলেন, আমি আশা করি, দেশের বাইরে চিকিৎসা করলে আমার দৃষ্টি ফিরতে পারে। আমার সেই সামর্থ্য নাই। আমার বাবা একজন রিকশাচালক’ এ অবস্থায় সরকারের কাছে তিনি তার উন্নত চিকিৎসার দাবি করেছেন।

এদিকে হাসপাতালটিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একজন ছাত্র প্রতিনিধিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ রুবায়েত রাজ নামে এই ছাত্র প্রতিনিধি আহতদের নিয়মিত তদারকি করছেন।

রাজ বলেন, রোগীদের অভিযোগ, ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছি। প্রয়োজনীয় সবকিছু ঠিকঠাক করা হয়েছে। চিকিৎসক সংকট নেই, চিকিৎসারও কোনো ঘাটতি নেই।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.