এইডসের নতুন ওষুধ ‘লিনাক্যাপাভি’, সংক্রমণ রুখবে ৯৬%
আশার আলো দেখছেন জর্জিয়ার এমোরি ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা
এইডসের মতো মারণব্যাধি সারানোর ওষুধ চলে এসেছে, এমন কথা বলা যায় না। তবে নানা রকম ওষুধ নিয়েই গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়ে। যার মধ্যে একটি ওষুধ নিয়ে আশার আলো দেখছেন জর্জিয়ার এমোরি ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এমন এক ওষুধ আবিষ্কার করা হয়েছে, যা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে বছরে দু’বার দেওয়া হলে এইচআইভি জনিত সংক্রমণ ৯৬ শতাংশ রুখে দেওয়া যাবে। ‘দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’ বিজ্ঞানপত্রিকায় এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে।
এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ভ্যালেরিয়া ক্যান্টস জানিয়েছেন, লিনাক্যাপাভির নামে একটি ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে। ওষুধটির তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়েছে। আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এখনও অবধি ২১৭৯ জন এডস আক্রান্ত রোগীকে ইঞ্জেকশনটি দিয়ে দেখা গিয়েছে, তাদের শরীরে সংক্রমণ অনেকটাই কমেছে। যদিও সেই রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ওষুধটি কতটা কার্যকর হচ্ছে, কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে কি না, সে দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে।
হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস বা এইচআইভি এক বার মানবশরীরে প্রবেশ করলে তা আক্রমণ করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে। দেখা দেয় ‘অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম’, সংক্ষেপে এডস। এখনও পর্যন্ত এই রোগ সম্পূর্ণ ভাবে নিরাময় করার মতো কোনও ওষুধ বা চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। তাই এই আবিষ্কারটি কার্যকর প্রমাণিত হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন মাইলফলক তৈরি হবে বলেই মত গবেষকদের।
কী ভাবে কাজ করবে নতুন ওষুধ : এমরি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও এক গবেষক কোলিন কেলি জানিয়েছেন, মানবদেহে টি-সেল নামক এক বিশেষ ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা থাকে, যা অস্থিমজ্জা থেকে উৎপন্ন হয়। এই কোষের কাজ হল বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে লড়াই করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে সক্রিয় করে তোলা। এই কোষকে ‘লিম্ফোসাইট’ও বলা হয়। নতুন ওষুধটি টি-কোষকে এমন ভাবে শক্তি জোগাবে, যাতে তা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। অর্থাৎ, এইচআইভিকে রুখতে শরীরের ভিতরে প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলবে।
কেলির দাবি, এর আগে এডস রুখতে যে প্রতিষেধকগুলি তৈরি করা হয়েছিল, তাদের বেশির ভাগেরই কার্যকারিতা এক মাসের বেশি স্থায়ী হয়নি। নতুন এই ওষুধটি দীর্ঘ সময় ভাইরাসকে দমিয়ে রাখতে পারবে বলেই দাবি করেছেন তিনি। আগামী দিনে এমন ধরনের ওষুধ তৈরি করে ক্যানসার নিরাময়ের চেষ্টা করা হবে বলেও জানিয়েছেন গবেষক।