শেরপুরে কফি চাষে সফলতার হাতছানি!
শেরপুর সীমান্তের নালিতাবাড়ীতে কফি চাষে সফলতার সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকেরা। সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, সহজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণে সহজ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে কফি চাষকে আরও সম্প্রসারণ করা সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয় উদ্যোক্তারা। কৃষি বিভাগ বলছে, উপজেলার পাহাড়ি এলাকার মাটির আর্দ্রতা ও উর্বরতার শক্তি কফি চাষের উপযোগী। এ অঞ্চলে ধারাবাহিক বৃষ্টিপাত ও মাটির গঠন বিন্যাস মিলে কফি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে। তাই কফি চাষে আগ্রহী কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ ও সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে।
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তা সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ। চার বছর ধরে পরীক্ষামূলকভাবে কফি চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছেন। এখন তার কাছ থেকে বিনা মূল্যে চারা নিয়ে কফি চাষে ঝুঁকছেন অন্তত শতাধিক কৃষক। বান্দরবানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির সময় পার্বত্য অঞ্চলে কফি চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। ২০২১ সালে চাকরি ছেড়ে নিজগ্রামে শুরু করেন কফি চাষ। পাঁচ কেজি কফির চারা থেকে গত তিন বছরে নিজের সমৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও বিনা মূল্যে কফির চারা সরবরাহ করেছেন। তার উৎপাদিত কফি যাচ্ছে ময়মনসিংহ, ঢাকা ও কক্সবাজারের বেশ কয়েকটি কফিশপে।
শেরপুরে কফি চাষে সফলতার হাতছানি
সাজ্জাদ হোসেন তুলিপ বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে কফির উৎপাদন বৃদ্ধি ও প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হলে কফির আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সম্ভব। শেরপুরের পাহাড়ি এলাকায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি একরে উৎপাদিত কফি ৩-৫ লাখ টাকা বিক্রি সম্ভব।’
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য ‘অ্যারাবিকা’ ও ‘রোবাস্টা’ জাতের কফি চাষ শুরু হয়েছে। রোবাস্টা জাতের কফি বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকায় চাষের উপযোগী। মার্চ-এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রতিটি পরিপক্ব গাছে ফুল ধরা শুরু হয়। মে-জুন মাসের মধ্যে ফুল থেকে গুটি গুটি ফলে পরিণত হয়। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ফল পরিপক্বতা লাভ করে। পরে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। বাজারজাত ও কফি পান করার জন্য উপযোগী করতে মেশিনের মাধ্যমে কফিবীজ গুঁড়া করে নিতে হয়। কফির বীজ থেকে চারাও উৎপাদন করা যায়।