এবার রাজস্ব বোর্ড থেকে সরানো হলো মতিউরকে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়েছে। রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) শুল্ক -১ শাখার উপসচিব মকিমা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করা হয়।
এই আদেশে মতিউর রহমানকে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতির পদ থেকে সরকারের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরপি) সংযুক্ত করা হয়।
কোরবানির ঈদে ১২ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে আলোচনায় আসেন মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। ঈদ শেষ হলেও ওই ছাগলকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক থামছে না। সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে ছাগল, ইফাত ও তার বাবা মতিউর রহমানকে নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা। ইফাত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিল ট্রাইব্যুনালের সভাপতি ড. মো. মতিউর রহমানের ছেলে। যদিও তা অস্বীকার করেন মতিউর। ইফাতের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্কই নেই বলেও জানিয়েছিলেন। আর ইফাত দাবি করেছিলেন, তিনি কোনো ছাগল কিনেননি।
তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে মতিউর রহমানই ইফাতের বাবা। ইফাত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক এগ্রো থেকে একটি ছাগল ছাড়াও ঢাকার অন্তত সাতটি খামার ও একটি হাট থেকে এ বছর ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন। গত বছরও কিনেছেন ৬০ লাখ টাকার পশু। ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনে লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে ছাগল ঘরে না আনা আলোচিত ইফাত পাখি পুষতে পছন্দ করেন। আড়াই লাখ টাকার পাখিও তার ঘরে আছে বলে এক ভিডিওতে ইফাতকে বলতে শোনা গেছে। তাঁর ঘরে মিশরের বাজরিগার পাখি, অস্ট্রেলিয়ার গালা কাকাতুয়াসহ আছে নানা প্রজাতির বেড়ালও।
ঈদে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক এগ্রো থেকে ১২ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে আলোচনায় আসেন ১৯ বছর বয়সী এ তরুণ। কিন্তু ফেসবুকে শুধু একটি ছাগল কেনার ভিডিও ঘুরলেও অর্ধশত ভিডিওতে ইফাতকে গরু কিনতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওয়ের সূত্র ধরে ঢাকার আশপাশে ১০টি খামারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইফাত এ বছর সাতটি খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন। তবে ফেসবুকে বিতর্কের মুখে সাদিক এগ্রো থেকে কেনা ওই ছাগল তিনি আর বাসায় নেননি।
ছাগল কেনার ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই তৈরির পর অনেকে ইফাতের অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এমন পরিস্থিতিতে ইফাতের বাবা মতিউর রহমানের নাম সামনে আসে। অনেকে তাঁর অঢেল সম্পদের তথ্য দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন। একজন সরকারি কর্মকর্তার ছেলের ১২ লাখ টাকা দিয়ে কোরবানির পশু কেনার সামর্থ্য হলো কী করে, সেই প্রশ্নও ওঠে।