তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই
তাইওয়ানের ৮ম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন লাই চিং তে ওরফে উইলিয়াম লাই। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে জয়লাভ করেন।
পশ্চিমা ও দেশটির স্বাধীনতাপন্থি ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বর্তমানে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি থেকে এবারের নির্বাচনে তিনি প্রেসিডেন্ট পদে লড়েছেন। দলীয় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সাই হিং ওয়েন এবার নির্বাচনে অংশ নেননি।
নির্বাচনে লাই চিং এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন চীনপন্থী নেতা চাইনিজ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (সিএনপি) কুওমিনতাং ও মধ্যপন্থী নেতা ওয়ান পিপলস পার্টির কো ওয়েন-জে।
দেশটির নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণ শেষে শনিবার সন্ধ্যায় ৯৮ শতাংশ ভোটকেন্দ্রের ফলাফল জানায়। এতে দেখা যায়, লাই চিং তে ৪০ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। বিপরীতে মধ্যপন্থী নেতা কো ওয়েন-জে ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন।
ফলাফল ঘোষণার পর পৃথক বিবৃতিতে, কুওমিনতাং ও কো ওয়েন-জে ফলাফল মেনে নিয়েছেন এবং লাই চিং তে-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, চীনের স্বশাসিত ভূখণ্ড তাইওয়ান (সরকারি নাম চীন প্রজাতন্ত্র) নিজেদেরকে স্বাধীন দেশ দাবি করে। এক সময় সম্মিলিত চীনের তৎকালীন বৈধ সরকার বর্তমান চীন কমিউনিস্ট পার্টির উত্থানের পর অভ্যুত্থানে উৎখাত হয়ে মূল খভূণ্ড থেকে পালিয়ে তাইওয়ানে আশ্রয় গ্রহণ করে। সেসময় ওই সরকারই আন্তর্জাতিকভাবে সম্পূর্ণ চীনের শাসক হিসেবে স্বীকৃত ছিল। পরবর্তীতে বর্তমান চীনা (গণপ্রজাতন্ত্রী চীন) সরকার স্বীকৃতি পেলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তাইওয়ান। বর্তমানে বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশ তাইওয়ানকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এছাড়া কেউ কেউ আংশিক স্বীকৃতি দেয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে এক চীন নীতিতে সমর্থন জানালেও তাইওয়ানে চীনের খবরদারি সমর্থন করে না। অন্যদিকে বেইজিং বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ দাবি করে এবং সম্প্রতি ভূখণ্ডটি দখল করতে একাধিকবার সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের খাতিরে চীনের একচীন নীতিকে সমর্থন জানালেও স্বশাসিত তাইওয়ানের অধিকারকেও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছেন, চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাইপের সাহায্যে এগিয়ে আসবে।
ধারণা করা হচ্ছে, লাই চিং তে নির্বাচিত হওয়ায় দেশটির সঙ্গে চীনের মতবিরোধ বাড়বে। এছাড়া তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা বাড়তে পারে। কেননা, শি জিনপিং নির্বাচনের আগে বিরোধী নেতা কুওমিনতাংকে ভোট দেওয়ার জন্য দেশটির জনগণকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। অন্যদিকে লাই স্বদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে আপোসহীন। এ নিয়ে চীনের সঙ্গে তার দূরত্ব বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।