নরসিংদীর রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশনে রোবট!

সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনে দুনিয়া এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। এবার নরসিংদীর একটি রেস্টুরেন্টে আসা লোকদের রোবটের মাধ্যমে পরিবেশন করা হচ্ছে মজার মজার সব খাবর। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ভালো দিক সবার কাছে তুলে ধরার জন্য এই প্রচেষ্টা বলে জানিয়েছেন রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

নরসিংদী শহরের স্টেশন রোডে অবস্থিত হলিডে রেস্টুরেন্ট। সেখানে ভোক্তাদের দেওয়া হচ্ছে রোবটিক সেবা। রেস্টুরেন্টে মেন্যু দেখে খাবার অর্ডার দিলে দেখা যায়, খাবার নিয়ে হাজির ‘বুলেট ট্রেন’ নামের দুটি রোবট। প্রতিটি টেবিলে ঘুরে ঘুরে খাবার সরবরাহ করছে অত্যাধুনিক এই রোবট দুটি। এই রোবটগুলোর কার্যক্রম দেখে মনে হয় মানুষও যেন হার মেনে যায় তাদের কাছে। খাবার দেওয়া থেকে শুরু করে ঘুরে ঘুরে প্রতিটি জায়গা পর্যবেক্ষণ করে রোবটগুলো। ভোক্তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা দিচ্ছে তাৎক্ষণিক। রোবট দেখার জন্য সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহল।

এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে সুন্দর মনোরম মিউজিকের তালে তালে খাবার সরবরাহ করে। খাবার নিয়ে ভোক্তার টেবিলের সামনে গিয়ে ইংরেজি ভাষায় স্বাগত জানায় রোবট। এরপর ট্রে থেকে খাবার নামিয়ে নিতে বলে। রোবটের ওপরে থাকা লাল সুইচে চাপ দিতে অনুরোধ করে গ্রাহকদের। সুইচে চাপ দিলেই রোবটটি ফিরে যায় রান্না ঘরে।

ব্যাংকার সৌরভ সরকার ও রাসেল মিয়া নামে কাপড় ব্যবসায়ী বলেন, আমরা দুই বন্ধু মনোহরদী থেকে এসেছি। রোবট কি সুন্দরভাবে খাবার পরিবেশন করছে। সঠিক সময় খাবার নিয়ে টেবিলে পৌঁছে যাচ্ছে। যেটাই অর্ডার দিচ্ছি সেটাই এনে দিচ্ছে রোবটটি। তার সেবা দেখে মনে হচ্ছে না এটা কোন রোবট, মনে হচ্ছে মানুষ। এই রোবটের হাতে খাবার খেতে অনেকেই রেস্টুরেন্টে ভিড় করছেন। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের অনেক ভালো লেগেছে।

রেস্টুরেন্টে খেতে আসা কাস্টমার ডাক্তার রিয়াজুল কবির বলেন, রোবট কথা শুনে মেয়েদের নিয়ে এখানে খেতে এসেছি। সবকিছু দেখে ভালো লেগেছে। রোবটের সেবায় খাবার খেয়ে এ প্রজন্ম আগামীর প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীর কথা ভাবতে আগ্রহী হবে।

হলিডে রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রেস্টুরেন্টিতে খাবার পরিবেশনের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা হয়েছে দুইটি রোবট। নাম রাখা হয়েছে ‘বুলেট ট্রেন’। রোবট দুটির দাম ৩০ লাখ টাকার বেশি। আসলে কিছু নতুনত্ব করার জন্য এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের ভালো দিক সবার কাছে তুলে ধরার জন্য আমার এই প্রয়াস।

তিনি আরও বলেন, অটোমেটিক সিস্টেমের মাধ্যমে রোবট দুইটি সঠিক সময় সঠিকভাবে খাবার সরবরাহ করতে পারে। কমান্ড অনুযায়ী রোবট দুটি কাজ করে। অনেকটা মানুষের থেকেও দ্রুত গতিতে কাজ করে। আমার রেস্টুরেন্টের দুইটি ফ্লোরে এখন দুইটি রোবট রয়েছে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে আরও রোবটের সংখ্যা বৃদ্ধি করবো। রোবটের হাতে খাবার খেতে নরসিংদীসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ ভিড় করছেন।

You might also like

Leave A Reply

Your email address will not be published.