অনাথ এবং কর্মজীবী নারীদের বাচ্চাদের জন্য স্তন্যদুগ্ধ ব্যাংক গড়ার পরিকল্পনা করেছিল বাংলাদেশ। সেই মতো এগিয়েছিল কাজও। চলতি মাসেই সূচনা হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু স্তন্যদুগ্ধ ব্যাংক গড়ার ধারণাটি ইসলাম ধর্মের পরিপন্থী- এই যুক্তিতে ব্যাংক খোলার কাজ বন্ধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশে শিশুদের অপুষ্টি একটি জ্বলন্ত সমস্যা। এই পরিস্থিতিতে ৫০০টি অনাথ শিশু এবং কর্মজীবী নারীদের বাচ্চাদের জন্য তৈরি হচ্ছিল এই স্তন্যদুগ্ধ ব্যাংক।
‘ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ’ দলের মুখপাত্র গাজি আতাউর রহমানের বক্তব্য,’এটি বিয়ে এবং বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অনৈতিক। একই মায়ের দুধ খেয়ে বড় হওয়া দু’টি ছেলেমেয়ে ভবিষ্যতে বিয়ে করলে তা শরিয়ত বিরোধী হবে।’
মাওলানা আহমেদ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ব্রেস্ট মিল্ক ব্যাংকের ধারণা ইসলাম বিরোধী। মাওলানাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, মালয়েশিয়ার মতো মুসলিম প্রধান দেশে অবশ্য স্তন্যদুগ্ধের ব্যাংক রয়েছে। তাঁরা কিভাবে শরিয়তের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে ব্যাংক তৈরি করল, সে ব্যাপারে একসঙ্গে বসে আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রখ্যাত মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ।
চলতি মাস থেকেই চালু হওয়ার কথা ছিল স্তন্যদুগ্ধের ব্যাংক। কিন্তু প্রতিবাদের জেরে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রজেক্ট এর কো-অর্ডিনেটর মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ডোনারের (দাতার) পুরো পরিচয় সহযোগেই আলাদা আলাদা করে দুধ সংরক্ষণ করতাম। এরপরও এত আপত্তির কারণ কী, জানি না।’
দেশটির প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞরাও ব্যাংকটির পক্ষে ছিলেন। তাদের মতে, এটি শিশুদের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি তাদের শারীরিক বিকাশেও ভূমিকা রাখতো।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ৯০ শতাংশই মুসলিম।
সূত্রঃ এএফপি